আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরেই মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ইনভেস্টর নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহামেডান কর্তারা। কিন্তু এই প্রসঙ্গে সোমবার এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন নওশাদ।

বলেন, ‘মহামেডানকে ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতো ট্রিট করা হচ্ছে’। সেই প্রসঙ্গে পাল্টা আইএসএফ নেতাকে ‘সস্তার প্রচারের চেষ্টা’ বলে আক্রমণ করেন দীপেন্দু বিশ্বাস যিনি মহামেডানের ফুটবল সচিব। এবার সেই মন্তব্যেরও পাল্টা দিলেন নওশাদ।

ফুটবলার হিসেবে দীপেন্দুক সম্মান জানিয়ে তিনি জানালেন, ইনভেস্টর আনার প্রসঙ্গে রাজনীতি করা হচ্ছে। সেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন দীপেন্দুও। তাঁর কথায়, ‘দীপেন্দু বিশ্বাস যথেষ্ট ভাল ফুটবলার ছিলেন। আমরা ওনার খেলা দেখেছি। ফুটবলার হিসেবে ওনাকে ছোট করতে পারব না। কিন্তু ফুটবল জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে তিনি যেভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেটাকে আমি সমর্থন করতে পারছি না’।

তাঁর দাবি, তাঁরা যেহেতু বিরোধী দলের রাজনীতি করেন তাঁদের কাজ শাসক দলের ভুলটাকে ধরিয়ে দেওয়া। দীর্ঘদিন ধরে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান দেশের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। নওশাদের অভিযোগ, তিন প্রধানের এক প্রধান নিজের জায়গা থেকে সরে আসছে।

ইনভেস্টর না থাকার কারণে ভাল টিমও হচ্ছে না। নওশাদ বলেন, ‘এই ঘটনাটা যদি মহামেডানের জায়গায় মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ঘটত তাও আমি বলতাম। মুখ্যমন্ত্রীকে দায়িত্ব নিতে হবে। দীপেন্দুবাবু আমাদের কথাটা ভাল ভাবে নেননি। শুনছি মহামেডানকে ফিফা থেকে ব্যান করে দিয়েছে, সেই ব্যান কীভাবে তোলা যায়, কীভাবে পরবর্তীতে ভাল ফুটবল উপহার দেওয়া যায় সেই দিকটা ভেবে দেখতে হবে। সে কারণেই আমি সমালোচনা করেছি’। 

নওশাদের বক্তব্য, দীপেন্দুবাবুর প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে গোটা বিষয়টা গ্রহণ করা দরকার ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। দরকার পড়লে ব্যক্তিগত স্তরে আমি চেষ্টা করব ইনভেস্টর আনার। যখনই আমি এই বিষয়ে খবর পেয়েছি তখনই সেটা প্রকাশ্যে এনেছি’।

এর আগে নওশাদ বলেছিলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের পাশে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে দাঁড়িয়েছিলেন সেভাবে মহামেডানের পাশে দাঁড়াননি। মহামেডান স্পোর্টিংকে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো ট্রিট করা হচ্ছে’।

তিনি দাবি করেন যদি তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তিনি মহামেডানের ইনভেস্টরের ব্যবস্থা করবেন। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে মোহনবাগান সমর্থকদের ওপর যে পুলিশের হামলা ঘটে তার সঙ্গেও রাজনীতির যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

বলেন, ‘কিছুদিন আগে দর্শকদের পুলিশ দিয়ে পেটানো হয়েছে। কখনও ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে নোংরামি হয়েছে’। ভারতীয় ফুটবল দলে যে বাঙালি দেখা যাচ্ছে না বর্তমানে সেই প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত মরশুমে আইএসএলে প্রথম বার খেললেও ফলাফল মোটেই ভাল হয়নি মহামেডানের। মাঝপথে দল ছেড়ে বিদায় নেন হেড কোচ। দায়িত্ব দেওয়া হয় মেহরাজউদ্দিন ওয়াড়ুকে। আজকাল ডট ইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে।

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ওপরেই ভরসা রাখছেন। অতীতেও বিভিন্ন সময়ে ক্লাবের পাশে থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারেও তার অন্যথা হবে না। নওশাদের বক্তব্যকে ‘সস্তার প্রচার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো সস্তার প্রচার ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা এর আগেও বহু সমস্যা নিয়ে দিদির কাছে গিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে থেকেছেন। এবারেও আমরা তাঁর ওপরেই ভরসা রেখেছি। দিদি সমস্যার সমাধান করে দেবেন। একমাত্র দিদিই পারবেন, আর কেউ পারবেন না’।