আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ কলকাতা লিগ হোক বা ডুরান্ড কাপ। হেরেই চলেছে মহামেডান। হারের ধারা অব্যাহত মহামেডান শিবিরে। কলকাতা লিগে এবার পিয়ারলেসের কাছেও পরাস্ত হল সাদা–কালো ব্রিগেড। ম্যাচের ঠিক চব্বিশ ঘণ্টা আগে ক্লাব তাঁবুতে শ’খানেক সাদা–কালো সমর্থক ডেপুটেশন দিতে এসে স্লোগান তুলে গিয়েছিলেন।


এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে নৈহাটি স্টেডিয়ামে নেমেছিলেন মেহরাজউদ্দিন ওয়াডুর ছেলেরা। কিন্তু গোটা ম্যাচে নির্বিষ ফুটবল খেলে মহামেডান। অন্যদিকে, ছয় ম্যাচ খেলে তিনটে জয় তিনটে ড্রয়ের ফলে এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবে শুরু করেছিল পিয়ারলেস। এদিন জয়ের ফলে তারা কলকাতা লিগে চারটি ম্যাচ জিতল।
মনোরঞ্জন সিংয়ের গোলে জয় পায় পিয়ারলেস। এই পরাজয়ের ফলে মহামেডান লিগ টেবলের সব শেষে দাঁড়িয়ে। তাদের সংগ্রহ মাত্র ১ পয়েন্ট। জঘন্য এই ফলাফল দেখে মহামেডান সমর্থকদের প্রশ্ন, সাদা–কালো শিবিরে আঁধার কবে কাটবে? ম্যাচের আগে মহামেডান কোচ বলেছিলেন, ‘‌ডুরান্ডে ছেলেরা যা খেলেছে তাতে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। হয়ত জয় পাইনি, সেটা অনভিজ্ঞতার জন্য। আশা করি সোমবার আমরা ঘুরে দাঁড়াব এই ম্যাচ থেকে।’‌ কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো তো দূরের ব্যাপার, ছ’টি ম্যাচ খেলে ফেললেও এখনও পর্যন্ত ঘরোয়া লিগে জয়ের দেখা পেল না মহামেডান। তার মধ্যে পাঁচটি ম্যাচেই হারের সামনে পড়তে হল সজল বাগদের। একটি মাত্র ম্যাচে ড্র এসেছে। সোমবার প্রথম একাদশে চোট কাটিয়ে উপেন টুডু ফিরলেও পরাজয়ের ‘‌ফাঁড়া’‌ কাটাতে পারল না মহামেডান। 

পায়ের পাতায় চিড় ধরেছিল। উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না তিনি। কিন্তু দল যখন বিপন্ন ম্যানচেস্টারে, তখন তিনি ব্যাট হাতে তরতরিয়ে নেমে এলেন সাজঘর থেকে। ব্যাট করলেন বুকে সাহস নিয়ে। ঋষভ পন্থ সেদিন অবাক করে দিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে। অনিল কুম্বলের সঙ্গে তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছিল পন্থের। 

ম্যানচেস্টার থেকে ওভাল আর কত দূর! সেখানেও তো দেখা গেল অসম সাহসী এক ক্রিস ওকসের লড়াই। দিনান্তে তিনি হয়তো পরাজিতের দলে। ইংল্যান্ড হেরে গেল। কিন্তু জিতে গেলেন ক্রিস ওকস। 

চোটের জন্য বল করতে পারেননি ওকস। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। প্রথম দিন ফিল্ডিং করার সময় কাঁধে চোট পান ওকস। কাঁধের হাড় সরে গিয়েছে।  তার পর আর ম্যাচে নামতে পারেননি। কিন্তু দলের প্রয়োজনে তিনি নিজের জীবন বাজি রাখতে পারেন। তিনি তৈরি ছিলেন। কাঁধের হাড় সরে গিয়েছিল ওকসের। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার ইয়র্কারে টংয়ের স্টাম্প উপড়ে যেতেই সাজঘর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলেন ওকস। তিনি ভাঙা হাতে লড়াইয়ের মঞ্চে অবতীর্ণ হন। ওই ব্যাট যেন তাঁর তলোয়ার।

এক হাতে ব্যাট। অন্য হাত স্ট্র্যাপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। স্ট্রাইক পেলে এক হাতে তাঁকে ব্যাট করতে হবে। এমনকী বোলাররা তাঁকে ব্যাকফুটে ফেলার জন্য কাঁধ লক্ষ্য করে বল করতেও পারেন। ওকস দেশের জন্য, দলের জন্য মাভৈঃ বলে ব্যাট হাতে নেমে পড়লেন। উল্টোদিকে দাঁড়ানো অ্যাটকিনসন একাই সব বল মোকাবিলা করছেন। ওভারের শেষ বলে রান নিয়ে স্ট্রাইক নিজের কাছে রাখছেন। একবার অ্যাটকিনসন দু'রান নিলেন। ক্যামেরা ধরল ওকসের মুখ। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। যন্ত্রণাকাতর ইংরেজ তারকা তবুও লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে যাওয়ার বান্দা নন।