আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটে আজকাল একটা কথার চল শুরু হয়েছে, 'ওয়ার্কলোড।' কপিল দেব, জাভাজাল শ্রীনাথদের সময় এই শব্দ শোনাই যায়নি। চুটিয়ে টেস্ট, একদিনের ক্রিকেটে খেলেন পেসাররা। তখন একাধিক দল ছিল না। একটা ভারতীয় দলই লাল বলের ক্রিকেট এবং সাদা বলের ক্রিকেট খেলত। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন দল তৈরি হয়েছে। প্লেয়াররা অনেক বিশ্রাম পায়। কিন্তু তাসত্ত্বেও ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের দোহাই খাড়া করা হয়। চতুর্থ টেস্টের আগেও ফাস্ট বোলারদের ওয়ার্কলোড নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। যশপ্রীত বুমরার পাশাপাশি মহম্মদ সিরাজের ওয়ার্কলোড নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। 

আগেই জানানো হয়েছিল, বুমরা তিনটে টেস্ট খেলবে। তারমধ্যে দুটো হয়ে গিয়েছে। সুতরাং, ম্যাঞ্চেস্টারে হয়ত তাঁকে খেলতে দেখা যাবে না। আবার ওভাল টেস্টে খেলবেন। কিন্তু আদৌ কতটা ওয়ার্কলোড রয়েছে ভারতীয় পেসারদের? ২০২৪ সালের শুরু থেকে টেস্টে ৪৫৩.৪ ওভার বল করেন বুমরা। খুব পিছিয়ে নেই সিরাজ। ৪২৩.৩ ওভার বল করেছেন। বিশ্বের পেসারদের মধ্যে দুই ভারতীয় তারকাই এগিয়ে। এরপর রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক (৪১২) এবং প্যাট কামিন্স (৪০১.১)। এতেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, লাল বলের ক্রিকেটে সিরাজ ভারতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এতটা ওয়ার্কলোড সত্ত্বেও থামার নাম নেই সিরাজের। তবে বুদ্ধি করে ব্যবহার করা হয়েছে তাঁকে। ইনিংস প্রতি গড় ১২.৮৩। সেখানে বুমরার ১৪.৬৩। কামিন্সের ১৪.৮৬। অর্থাৎ, একটানা লম্বা সময় ধরে তাঁকে বল করানো হয়নি। এর থেকে ইনিংস প্রতি ওভার বেশি ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকসের। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডেন শিলস। 

সিরাজের দায়বদ্ধতা এবং এনার্জির প্রশংসা করেন টিম ইন্ডিয়ার সহকারী কোচ। রায়ান টেন দুশখাতে বলেন, 'ও কখনও দায়িত্ব এড়িয়ে যায় না। ও বল হাতে সিংহের মতো। তাই ওকে নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হয়। ও সবসময় বল করার জন্য তৈরি থাকে। এমনকী যখন আমরা ওকে বিশ্রাম দিতে চাই।' তবে ভারতের এই ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে একমত নয় প্রাক্তনীরা। এই প্রসঙ্গে কড়া মন্তব্য করেন ইরফান পাঠান। বেন স্টোকস এবং জোফ্রা আর্চারের উদাহরণ দেন। ইরফান বলেন, 'পঞ্চম দিনে বেন স্টোকস ৯.২ ওভারের ম্যারাথন স্পেল করে। ব্যাট করে, বল করে, গুরুত্বপূর্ণ রান আউট করে, কিন্তু কেউ ওর ওয়ার্কলোড নিয়ে কথা বলে না। ভারতে আমরা ম্যাচ চলাকালীনও ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আলোচনা করি। এটা তার আদর্শ সময় নয়। যখন কোনও গুরুত্বপূর্ণ খেলা থাকবে না, তখন বিশ্রাম দাও।' জোফ্রা আর্চারের উদাহরণ দেন পাঠান। চার বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই টানা ছয় ওভারের ওপেনিং স্পেল করেন। লর্ডসে হারের পর ম্যাঞ্চেস্টারে সিরিজে সমতা ফেরানোর চাপে থাকবে ভারত।