আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা তাঁর নাম রেখেছেন মিস্টার অ্যাংগ্রি। তিনি রেগে যান। সতীর্থদের উপরেও রাগ দেখান। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের দিকে কড়া চোখে তাকান। ইংল্যান্ড ব্রিগেড তাঁর নামই দিয়ে দিয়েছে মিস্টার অ্যাংগ্রি।
জো রুটের মতো তারকা ইংরেজ ক্রিকেটার আবার বলেছেন, সিরাজ কিন্তু সব সময়ে রাগে না। কখনও কখনও নকল রাগ দেখায়।
কিন্তু ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন আবার সিরাজকে প্রাক্তন অজি কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সবাই বলতেন, শেন ওয়ার্ন স্পিনার হতে পারেন কিন্তু তাঁর মানসিকতা ফাস্ট বোলারদের মতো।
আরও পড়ুন: সিরাজের কাছেই ওভালে হার, স্টোকসরা এখন এই নামে ডাকছেন ওভাল টেস্টের নায়ককে
নাসের হুসেন নিজের কলামে লিখেছেন, ''বুমরাহ যে দুটো ম্যাচে খেলেনি, সেই ম্যাচদুটোতেই জিতেছে ভারত। আর এই জয়ের পিছনে রয়েছে একজনই- মহম্মদ সিরাজ।''

২০২৫-এর ওভাল আর ২০০৫-এর অ্যাশেজের মিল খুঁজে পাচ্ছেন নাসের হুসেন। হ্যারি ব্রুক ১৯ রানে ব্যাট করছিলেন। সেই সময়ে সিরাজ তাঁর ক্যাচ ধরেও বাউন্ডারির বাইরে চলে যান। যেখানে আউট হওয়ার কথা ছিল, সেখানে ছক্কা হয়। হ্যারি ব্রুক সেঞ্চুরি করে থামেন।
ওভালে জেতার জন্য ৩৫ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল চার-চারটি উইকেট। ভারতের সুযোগ কম। বরং ইংল্যান্ড অ্যাডভান্টেজে বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ অন্যকিছু হয়তো ভেবে রেখেছিলেন। দিনটা তাঁর। ওভাল টেস্টে লেখা থাকবে তাঁর নাম। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা শুরুতেই রান দিয়ে দিলেন একগাদা। চাপ বাড়ল ভারতের উপরে। সিরাজ বল হাতে প্রথমে ফেরালেন স্মিথকে। তার পরে ওভারটন। অন্যদিকে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অ্যাটকিনসন। তিনি মারমুখী। এদিকে কৃষ্ণর ইয়র্কারে উইকেট ভাঙল টংয়ের। অ্যাটকিনসনের উইকেট ভেঙে ব্রিটিশ-ভূমে নতুন এক রূপকথা লিখলেন সিরাজ।
২০০৫-এর অ্যাশেজেও কেভিন পিটারসেনের ক্যাচ ফেলেছিলেন। সিরাজও ক্যাচ ছাড়ায় খলনায়ক হয়ে যাচ্ছিলেন। ক্রিকেট একবলের খেলা। বারংবার সুযোগ পাওয়া যায় না। ওভাল কিন্তু সিরাজকে আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল। হায়দরাবাদি দুই হাতে সেই সুযোগ গ্রহণ করেন। পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই আগুন জ্বালালেন। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনলেন। নাসের হুসেন বলছেন, ''সিরাজ সবসময়ে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেয়। কখনও কখনও খলনায়কের মতো হয়ে যায়, যেমন ওয়ার্নি হত, তাই মানুষ ওকে ঘৃণা করত কিন্তু ওর মুখে সবসময়ে চওড়া হাসি থাকে।''

সিরাজের তীব্রতার জন্য ইংল্যান্ডের ছেলেরা ওর নাম দিয়েছে মিস্টার অ্যাংগ্রি। জন্ম থেকেই ও এন্টারটেইনার। তবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার জন্য যে গুণগুলোর দরকার, তার সবটাই আছে সিরাজের। ভাল মনের অধিকারী, প্যাশন দিয়ে খেলে এবং সর্বোপরি স্কিল।''
পঞ্চম দিনে শুরুটা দুর্দান্ত করেন সিরাজ। অফস্ট্যাম্পের বাইরে বল রেখে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের বিব্রত করে গিয়েছেন। তাঁদের শট খেলার জন্য প্রলোভন দেখিয়েছেন। সিরাজের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। নাসের হুসেন বলছেন, ''সিরাজ ঠিকঠাক পারফর্ম করতে না পারলে ভারত হেরে যেত। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার সঠিক ভাবে নিজেকে প্রয়োগ করেছেন।''
আরও পড়ুন: গোমরা মুখো গম্ভীরও ওভাল টেস্ট জিতে আবেগে ভাসলেন, ড্রেসিংরুমে কী হল জেনে নিন ...
