আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের সমাজে প্রেম ও সহাবস্থানের প্রশ্নে এখনও প্রবল বিতর্ক চলছেই। বিশেষত ধর্মীয় গুরু অনিরুদ্ধাচার্য ও প্রেমানন্দ মহারাজ সম্প্রতি লাইভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করায় এই আলোচনার আগুন আরও জ্বলে উঠেছে। অন্যদিকে পশ্চিম দেশগুলিতে সম্পর্কের সংজ্ঞা ও ধরন ক্রমশ বদলাচ্ছে। কেউ খোলা সম্পর্ক (open relationship) গ্রহণ করছেন, কেউ আবার একাধিক সম্পর্ককে একসঙ্গে বাঁচিয়ে রাখছেন। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন এক যুগল—নাতাশা ও গ্রেগরি। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা নাতাশা ও তার প্রেমিক গ্রেগরি (৬ ফুট) একে অপরকে চিনেছিলেন একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। প্রথম দেখাতেই তাঁদের মধ্যে অদ্ভুত আকর্ষণ তৈরি হয় এবং এক মাসের মধ্যেই সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক রূপ দেন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়—তাঁরা প্রচলিত একগামী সম্পর্ককে (monogamy) প্রত্যাখ্যান করে খোলা সম্পর্ককে বেছে নিয়েছেন।
নাতাশার কথায়, “গ্রেগরির পছন্দ খুবই সহজ—সুন্দরী মহিলা। আমি যদি কাউকে আকর্ষণীয় মনে করি, জানি ওরও ভালো লাগবে।" তাই প্রেমিকের জন্য নতুন সঙ্গিনী খুঁজে দেওয়াকে তিনি স্বাভাবিক বলে মনে করেন। শুধু তাই নয়, গ্রেগরি নিজেও অন্য এক মহিলা—রোজ নামের এক সঙ্গিনীর সন্ধান করছেন। নাতাশা নিজেই প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, তিনি গ্রেগরির জন্য অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেন। একইসঙ্গে তাঁরা দু’জন মিলে প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্টও তৈরি করেন। তাঁদের মতে, খোলা সম্পর্ক কোনওভাবে সহজ নয়, বরং একে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আরও বেশি সততা, নিয়মিত যোগাযোগ এবং সমঝোতা।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের 'ডেজার্টে' মন ভরে না প্রেমিকার, যৌন অতৃপ্তি মেটাতে সেই 'জিনিস' ব্যবহার করলেন তরুণী!
তবে নাতাশার পরিবার এই জীবনযাত্রা মেনে নিতে পারছেন না। প্রকাশ্যে প্রেমিক ছাড়া অন্য পুরুষের সঙ্গে মেয়েকে দেখা তাঁদের কাছে অত্যন্ত অস্বস্তিকর। নাতাশা জানিয়েছেন, “আমার বাবা-মা এখনও বোঝেন না কেন আমি প্রেমিকের বাইরে অন্য পুরুষদের সঙ্গে সময় কাটাই।" ভারতে এই ধরনের খোলা সম্পর্ক এখনও সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। কিন্তু নাতাশা-গ্রেগরির কাহিনি প্রমাণ করছে যে, সম্পর্কের সংজ্ঞা বিশ্বায়নের সঙ্গে সঙ্গে বদলাচ্ছে। পশ্চিমে যেখানে এ ধরনের সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা পাচ্ছে, ভারতে সেখানে তা এখনও বিতর্কিত ও সাংস্কৃতিক ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়।
প্রেম, সম্পর্ক ও বিবাহের ধারণা সমাজভেদে ভিন্ন ভিন্ন রূপ নেয়। নাতাশা ও গ্রেগরির খোলা সম্পর্ক অনেকের কাছে অস্বাভাবিক মনে হলেও, তাঁদের মতে এটাই তাঁদের সুখী রাখে। প্রশ্ন উঠছে—ভারতীয় সমাজ কি এমন খোলা ও স্বচ্ছ সম্পর্ককে একদিন গ্রহণ করবে, নাকি চিরকালই তা বিতর্কের কেন্দ্রে থেকে যাবে?
