শীত এলেই অনেকের শরীরে একগুচ্ছ সমস্যা ভিড় করে। পেট ফাঁপা, ত্বকের শুষ্কতা, খুশকি, চুল পড়া, ঠোঁট ফাটা কিংবা সারাদিন ক্লান্ত লাগা। বাইরে থেকে ময়েশ্চারাইজার বা নানা প্রসাধনী ব্যবহার করলেও ভেতরের যত্ন না নিলে সমস্যার সমাধান হয় না। এই প্রসঙ্গেই কারিনা কাপুরের নিউট্রিশনিস্ট রুজুতা দিবেকর শীতের জন্য তিনটি সহজ অথচ অত্যন্ত কার্যকর খাবারের কথা বলেছেন যা নিয়মিত খেলে শীতকালীন নানা অস্বস্তি অনেকটাই কমে।
রুজুতার মতে, শীতে শরীরের হজমশক্তি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। তাই এই সময়ে ঋতুভিত্তিক ও স্থানীয় খাবার খাওয়াই সবচেয়ে উপকারী।
প্রথমেই রয়েছে বাজরা। শীতের জন্য এটি একেবারে আদর্শ শস্য। বাজরার রুটি বা বাজরার খিচুড়ি শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখে। এতে প্রচুর ফাইবার ও মিনারেল থাকে, যা হজম ভাল করে এবং পেট ফাঁপার সমস্যা কমায়। শুধু তাই নয়, বাজরা শরীরের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় এনার্জি ধরে রাখে। যাঁরা শীতে বেশি দুর্বলতা বা ঠান্ডা অনুভব করেন, তাঁদের জন্য বাজরা খুবই উপকারী।
দ্বিতীয় খাবারটি হল উন্ডিয়ু৷ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি ও ডাল দিয়ে তৈরি এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পদ। এটি মূলত গুজরাতি রান্না হলেও এর উপাদানগুলি ভীষণ স্বাস্থ্যকর। রুজুতা জানান, উন্ডিয়ু প্রাকৃতিক প্রিবায়োটিকের কাজ করে। অর্থাৎ এটি অন্ত্রের ভাল ব্যাকটেরিয়াকে সক্রিয় রাখে। ফলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি ও ব্লটিংয়ের সমস্যা অনেকটাই কমে। যাঁদের নিয়মিত পেটের সমস্যা হয়, তাঁদের জন্য শীতে এই ধরনের মিক্সড সবজি ভীষণ উপকারী।
তৃতীয় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল শুকনো নারকেল। রুজুতা একে শীতের ‘প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার’ বলেন। শুকনো নারকেলে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যা ত্বকের শুষ্কতা কমায়, খুশকি ও চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটি দীর্ঘ সময় এনার্জি জোগায় এবং অকারণে খিদে পাওয়াও কমায়। শীতে অতিরিক্ত চা-কফির বদলে সামান্য শুকনো নারকেল খাওয়া অনেক বেশি উপকারী।
রুজুতার মতে, শীতের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচতে দামি সাপ্লিমেন্ট নয়, বরং ঘরোয়া ও ঋতুভিত্তিক খাবারই আসল চাবিকাঠি। সেক্ষেত্রে বাজরা, শীতকালীন সবজি আর শুকনো নারকেল-এই তিনটি খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে ভেতর থেকে শরীর থাকবে সুস্থ, ত্বক ও চুলও পাবে প্রাকৃতিক জেল্লা।
