দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবন এবং কাজের চাপের কারণে অনেকেই নিজের শরীর এবং খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন না। যার ফলে সামান্য পরিশ্রমেও শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় এবং দুর্বলতা অনুভূত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সকালে খালি পেটে বিটরুটের জুস পান করলে শরীরের অনেক সমস্যা দূর হতে পারে।

বিটরুট শরীরের জন্য বিভিন্ন দিক থেকে খুবই উপকারী। এটি নানারকম পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং চিকিৎসকরাও রোগীদের এটি খাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে বিটরুটের জুসে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়।

আয়ুর্বেদিক পরামর্শক ডঃ আশিষ গুপ্ত বলেন, “দিনের শুরুতে খালি পেটে বিটরুট এবং লেবুর জুস পান করা অত্যন্ত লাভজনক। এটি শরীরকে শক্তি দেয় এবং এনার্জি বুস্টার হিসেবে কাজ করে।”

বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট থাকে। লেবুর রসের সঙ্গে মিলিয়ে এটি হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। দিনে শুরুতেই এই জুস পেলে শরীর সারাদিন এনার্জি থাকে, দুর্বলতা কমে যায় এবং হজম শক্তিও বাড়ে।

লেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, আর বিটরুটে আছে আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই দুই উপাদানের জুস শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেয়। ডঃ আশিষ আরও বলেন, “লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভনয়েড শরীরে ক্লান্তি কমায়, লিপিড পেরক্সিডেশন কমায় এবং এটি অ্যান্টি-এজিং হিসাবে কাজ করে। বিটরুট এবং লেবুর জুস মাংসপেশি এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ও অক্সিজেন সরবরাহও উন্নত করে।”

বিটরুট এবং লেবুর জুসের উপকারিতা শুধু শরীরের শক্তি বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি নিয়মিত পান করলে মানুষের সামগ্রিক সুস্থতা এবং মানসিক সতেজতায়ও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। সকালে খালি পেটে এই জুস গ্রহণ করার অভ্যাস ধীরে ধীরে দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে আরও প্রাণবন্ত ও সতেজ করে তোলে। শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি এটি আপনাকে শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, নিয়মিত এই ধরনের প্রাকৃতিক জুস গ্রহণ একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারার প্রতিফলন, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি একটি সহজ, প্রাকৃতিক এবং কার্যকর উপায়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থতা এবং সজীবতার সমন্বয় ঘটায়।