আজকাল ওয়েবডেস্ক: সন্তান জন্ম দেওয়াই তার নেশা। টানা ৪৩ বছর সন্তান প্রজননের পর অবশেষে অবসর নেয় দিয়েগো। ততদিনে সন্তানের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৮০০। কার্যত একাই নিজের প্রজাতিকে উদ্ধার করে তত দিনে আক্ষরিক অর্থেই সে ‘জাতির পিতা’। নেপথ্যে নেই কোনও স্পার্ম ডোনেশন, একেবারে প্রাকৃতিক ভাবেই নিজের বংশবৃদ্ধি করা সেই দিয়েগো অবশ্য মানুষ নয়। দৈত্যাকার কচ্ছপ।

১৯৬০-এর দশকে, শিকারীদের দ্বারা অত্যাধিক শিকার এবং বাসস্থান ধ্বংসের কারণে এস্পানিওলা দ্বীপের দৈত্যাকার কচ্ছপ প্রায় বিলুপ্ত হতে বসে। এক সময় এই প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা কমে মাত্র ১৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছিল। যার মধ্যে ১২টি ছিল স্ত্রী এবং ৩টি পুরুষ। প্রজাতিটিকে চরমভাবে বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

এই অবস্থায় কচ্ছপের প্রজাতিটিকে বাঁচানোর জন্য, গ্যালাপাগোস ন্যাশনাল পার্ক এবং চার্লস ডারউইন ফাউন্ডেশন একটি কৃত্রিম প্রজনন কর্মসূচি চালু করে। সেই সময় প্রজননে সক্ষম পুরুষ কচ্ছপ হিসাবে বেছে নেওয়া হয় দিয়েগোকে। দিয়েগো তখন সান দিয়েগো চিড়িয়াখানায় থাকত। ১৯৭৭ সালে তাকে সান্তা ক্রুজ দ্বীপে একটি কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। এরপরই ক্রমাগত সন্তানের জন্ম দিয়ে গিয়েছে সে।

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে প্রজনন কর্মসূচিতে জন্ম নেওয়া সমস্ত কচ্ছপের প্রায় ৪০% কচ্ছপের পিতাই দিয়েগো। অর্থাৎ দিয়েগোর সন্তান সংখ্যা প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০। এই কর্মসূচি সফল হওয়ায় এখন প্রজাতিটি আর বিলুপ্ত নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে কৃত্রিম প্রজননের আর প্রয়োজন নেই। ২০২০ সালের জুন মাসে, দিয়েগোকে এই কর্মসূচি থেকে অবসর দেওয়া হয়। অবসরের পর দিয়েগোকে বন্য পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়।