আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমাদের সমাজে, বিশেষত গ্রামবাংলায়, যুগ যুগ ধরে নানা ধরনের বিশ্বাস ও ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তেমনই একটি ধারণা যে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান হয়। এই ধারণাটি এতটাই প্রচলিত যে অনেক পরিবারে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে জোড়া কলা খেতে বারণ করা হয়, আবার অনেকে যমজ সন্তান লাভের আশায় এটি খেয়েও থাকেন। কিন্তু এই বিশ্বাসের পিছনে কি কোনও বৈজ্ঞানিক সত্যতা আছে?
জোড়া কলা আসলে কেন হয়?
বিজ্ঞানের ভাষায়, উদ্ভিদের ফুল বা ফলের এই ধরনের অস্বাভাবিক গঠনকে ‘ফ্যাসিয়েশন’ বলা হয়। এটি উদ্ভিদের একটি জিনগত বা পরিবেশগত ত্রুটির কারণে ঘটে। যখন উদ্ভিদের কোষগুলো স্বাভাবিকভাবে বিভাজিত না হয়ে পাশাপাশি প্রসারিত হতে শুরু করে, তখন কান্ড, ফুল বা ফল চ্যাপ্টা হয়ে একসঙ্গে জুড়ে যায়। কলা গাছের ক্ষেত্রে, যখন কলার মোচার মধ্যে থাকা একাধিক ফুল একসঙ্গে মিশে গিয়ে জোড়া কলার জন্ম হয়। এটি সম্পূর্ণই উদ্ভিদের একটি অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। এর সাথে মানব শরীরের প্রজনন প্রক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, যমজ সন্তান জন্মানোর প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এর সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট আকারের ফল খাওয়ার সরাসরি যোগসূত্র নেই। যমজ সন্তান মূলত দুই ধরনের হয়।
১. ফ্রেটারনাল টুইন: যখন কোনও মহিলার ডিম্বাশয় থেকে একই সময়ে দু’টি ডিম্বাণু নির্গত হয় এবং দু’টি ভিন্ন শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয়, তখন ফ্রেটারনাল টুইনসের জন্ম হয়। এদের দেখতে আলাদা হতে পারে এবং এদের লিঙ্গ ভিন্নও হতে পারে।
২. আইডেন্টিক্যাল টুইন: যখন একটি মাত্র ডিম্বাণু একটি শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার পর ভ্রূণটি দু’টি সমান ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, তখন আইডেন্টিক্যাল টুইনসের জন্ম হয়। যেহেতু তারা একই ভ্রূণ থেকে জন্মায়, তাই তাদের জিনগত গঠন একই থাকে, চেহারা হুবহু এক হয় এবং লিঙ্গও সর্বদা একই থাকে। এই প্রক্রিয়াটি মূলত একটি আকস্মিক ঘটনা এবং এর পিছনে কোনও নির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি।
