অনেক মহিলাই লক্ষ্য করেন যে সময়ের সঙ্গে তাদের গোপনাঙ্গের আশপাশের ত্বক স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা গাঢ় হয়ে যায়। মুখ, হাত, পা কিংবা গলার ত্বকের যত্ন নেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ—নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু গোপনাঙ্গের যত্ন প্রায়শই উপেক্ষিত থেকে যায়, ফলে সেখানে ত্বকের রঙের পরিবর্তন বা মলিনতা দেখা দেয়।
মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রশ্ন হল, স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার কি আসলেই গোপনাঙ্গের ত্বককে কালো করে দেয়? এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে অ্যাস্থেটিক ফিজিশিয়ান এবং কসমেটোলজিস্ট ডা. করুণা মালহোত্রা জানান, প্যাড নিজে থেকে ত্বক কালো করে না।
ডা. মালহোত্রার মতে, শুধু স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করলেই ত্বকে রঙের পরিবর্তন বা দাগ পড়ে না। তবে ভেজা প্যাড দীর্ঘ সময় ধরে পরে থাকা বা সঠিক স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জ্বালা–পোড়া এবং অস্বস্তি হতে পারে, যা ত্বকের রঙে পরিবর্তন আনতে পারে। এর বাইরে আরও কিছু কারণ রয়েছে—
 
 
 ঘর্ষণ: আঁটসাঁট অন্তর্বাস বা চলাফেরার ফলে বারবার ঘষা লেগে ত্বক গাঢ় হতে পারে। প্যাড থেকেও এটি হতে পারে।
 
 ঘাম এবং আর্দ্রতা: গোপনাঙ্গে জমে থাকা ঘাম এবং ভেজাভাব চুলকানি, জ্বালা এবং অতিরিক্ত রঞ্জন অর্থাৎ হাইপারপিগমেন্টেশন ঘটাতে পারে।
 
 হরমোনের পরিবর্তন: ঋতুস্রাবের সময়, গর্ভাবস্থা কিংবা বয়সজনিত হরমোন পরিবর্তন ত্বকের রঙকে প্রভাবিত করতে পারে।
 
 জেনেটিক্স: অনেক নারীর জন্মগতভাবেই ত্বক সহজে গাঢ় হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।
 
 ডা. মালহোত্রা আরও জানান, গোপনাঙ্গের ত্বক স্বাভাবিকভাবেই শরীরের অন্য অংশের তুলনায় কিছুটা গাঢ় হয়, এবং এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে প্রতিটি নারীর ত্বকের প্রতিক্রিয়া আলাদা। কারও কখনও রঙের পরিবর্তন হয় না, আবার কারও ক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে সামান্য পরিবর্তন দেখা যায়।
গোপনাঙ্গে সুস্থ ত্বক বজায় রাখার উপায়
 
 
 কড়া সাবান বা রাসায়ানিকযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। এই অংশের ত্বক খুবই সংবেদনশীল।
 
 ঘাম কমাতে হাওয়া চলাচলযোগ্য সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।
 
 ঋতুস্রাবের সময় প্রতি চার থেকে ছ’ঘণ্টা অন্তর স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করুন।
 
 কোমল, পিএইচ-ব্যালান্সড ইন্টিমেট ওয়াশ ব্যবহার করুন।
 
 প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যেমন নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেল লাগাতে পারেন।
 
 ত্বকের রঙে যদি অতিরিক্ত পরিবর্তন দেখা যায়, তবে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে কেমিক্যাল পিল বা লেজার থেরাপির মতো চিকিৎসা নিতে পারেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, স্যানিটারি প্যাড সরাসরি ত্বক কালো করে না। তবে অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা, ঘর্ষণ এবং ব্যক্তিগত এবং পরিবেশগত নানা কারণে ত্বকের রঙে পরিবর্তন হতে পারে। সঠিক যত্ন এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
