আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুখ খুললেই কিলবিল করে বেরিয়ে আসছে মুঠো মুঠো জ্যান্ত পোকা! শিশুকে পরীক্ষা করতেই আঁতকে উঠলেন চিকিৎসকেরা। কী রয়েছে পেটে? এক মাস ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চিকিৎসকরা যা দেখলেন তাতে চোখ কপালে ওঠার অবস্থা।
টানা প্রায় এক মাস ধরে বমি করলেই বেরিয়ে আসছে কিলবিল করা জ্যান্ত পোকা! চিনের জিয়াংসু প্রদেশের ইয়াংঝো শহরের এক আট বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে রীতিমতো হুলস্থুল কাণ্ড। মেয়েটির বাবা চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, প্রতি বার বমির সঙ্গে প্রায় একমুঠো করে ১ সেন্টিমিটার লম্বা লার্ভা বেরিয়ে আসছে।
বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও যখন রোগ নির্ণয় করা যাচ্ছিল না, তখন দিশেহারা পরিবারটি শেষমেশ পৌঁছয় সুচো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিলড্রেন'স হসপিটালে। সেখানেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঝাং বিংবিং-এর পরামর্শে পোকাগুলিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় স্থানীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রে। আর তাতেই মেলে সমাধান। বিশেষজ্ঞরা জানান, এগুলি আসলে ড্রেন মাছি বা মথ মাছির লার্ভা, যা সাধারণত বাথরুম বা রান্নাঘরের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্মায়।
কিন্তু কীভাবে এই লার্ভা শিশুটির শরীরে ঢুকল? ইয়াংঝো রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধান জু ইউহুই ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’কে জানিয়েছেন, ‘‘নিশ্চিত করে না বলা গেলেও দাঁত মাজার সময়ে বা টয়লেট ফ্লাশ করার সময়ে জলের ছিটে থেকে এই লার্ভা শিশুটির শরীরে প্রবেশ করে থাকতে পারে।’’ আবার, এলাকার ভূগর্ভস্থ পানীয় জল লার্ভার দ্বারা দূষিত হয়ে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত চীনের দক্ষিণাঞ্চলে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এই মথ মাছির উপদ্রব বাড়ে। এরা সরাসরি রক্তে রোগ ছড়ায় না ঠিকই, কিন্তু এদের লার্ভা পেটে গেলে বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জু আরও সতর্ক করে বলেন, ‘‘এই মাছি খালি হাতে মারা উচিত নয়। কারণ, এদের শরীরের ব্যাকটিরিয়া হাতে লেগে গিয়ে চোখ ঘষলে বা অন্য কোনও ভাবে শরীরে ঢুকতে পারে।’’
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই পোকার উপদ্রব থেকে বাঁচতে নুন ও বেকিং সোডা মেশানো ফুটন্ত জল ড্রেনে ঢালতে হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি হল বাথরুম ও রান্নাঘর সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো রাখা।