আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'জোট বাঁধো, বাঁধ ভাঙো'। ৪ নভেম্বর মহা মিছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। তার আগের বিকেলে, নিজেদের বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে গান লিখলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই গান সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মমতা লিখেছেন, 'কালকের মিছিলের আগে আমাদের বক্তব্যের প্রতিফলন হিসেবে দয়া করে আমার লেখা ও সুর করা এই গান শুনুন। গেয়েছেন ইন্দ্রনীল সেন।'
কী রয়েছে সেই গানে?
রয়েছে জোট বাঁধার আহ্বান। রয়েছে প্রশ্ন। বলা হয়েছে বাঁধ ভাঙার কথা। প্রশ্ন রয়েছে, 'আর কত যাবে মানবিক প্রাণ?' রয়েছে সাফ বার্তা, 'মানছি না, মানব না।' গানের মাধ্যমেই মমতা মনে করালেন বাংলার অঙ্গীকার, লিখেছেন 'জীবন দেব, মান দেব না।'
৪ নভেম্বর মিছিল তৃণমূলের। ৪ নভেম্বর থেকে এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যাবেন বিএলওরা। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার সময়ে রেড রোডে বিআর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে কলকাতা সহ জেলার নেতা-কর্মীদের জমায়েত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুপুর আড়াইটে থেকে শুরু হবে মিছিল। আম্বেদকর মূর্তির সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে পৌঁছবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত। উল্লেখ্য, শুক্রবার দলের কর্মীদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন অভিষেক।

তিনি জানান, ৪ নভেম্বর থেকেই এক মাস এসআইআর ক্যাম্প চালাবে তৃণমূল। পাশাপাশি, বুথ ভিত্তিক এজেন্ট (বিএলএ)-দের তাঁর নির্দেশ, এনুমারেশন ফর্মের কাজ করার সময় এক মিনিটও বিএলও-দের একা ছাড়া যাবে না।
সব সময় ছায়ার মতো তাঁদের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে অভিষেক রাজ্য জুড়ে ৬২০০টি ক্যাম্প চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে ক্যাম্পগুলি চালানো হবে।
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হেল্পডেস্ক চালু করছে তৃণমূল। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৬২০০ হেল্পডেস্ক কাজ করবে। এসআইআর সংক্রান্ত জনতার সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে এসব হেল্প ডেস্ক।
এর পাশাপাশি অভিষেক দলের সব কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই ছয় মাস আমাদের অ্যাসিড টেস্ট। এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে সকল ভোটারের নাম তুলতে হবে। কারও নাম যেন বাদ না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।’
বুথ ভিত্তিক এজেন্টদের উদ্দেশ্যে তাঁর নির্দেশ, এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন বিএলও-দের ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতে হবে। এক মিনিটও তাঁদের একা ছাড়বেন না। কোনও বিএলও যেন অনৈতিক কাজ না করতে পারেন, তা দেখার দায়িত্ব বিএলএ-দের।
দলীয় সূত্রে খবর, দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের ওয়ার রুম তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। ২৯৪টি বিধানসভার প্রতিটিতে একটি করে ওয়ার রুম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার রুমে ১৫ জন করে থাকবেন।
উত্তরের জেলাগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। উল্লেখ্য, বাংলায় এসআইআর বাতিলের দাবিতে আগামী ৫ নভেম্বর থেকে আমরণ অনশন বসছে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ।
এদিন মতুয়া সম্প্রদায়ের তরফে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। তাঁর দাবি, মতুয়া সম্প্রদায়ের কোনও ভোটারের নাম যেন বাদ না যায়।
আজকাল ডট ইনকে তিনি জানান, ‘ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যে ১১টি নথির কথা জানানো হয়েছে, তা আমাদের অনেক ভোটারেরই নেই। যাঁরা মৃত ভোটার বা যাঁদের নাম একবারের বেশি তালিকায় রয়েছে তাঁদের নাম বাদ যাক। কিন্তু যাঁরা এত বছর ধরে ভোট দিয়ে আসছেন তাঁদের নাম যেন বাদ না যায়’।
