আজকাল ওয়েবডেস্ক:
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিন কয়েক আগেই আমেরিকার টেক্সাসে ঘটে গিয়েছে হাড়হিম কাণ্ড। টেক্সাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার মাথা কেটে দিয়েছিলেন তাঁরই এক সহকর্মী। স্ত্রী, পুত্রের সামনেই নাগামাল্লাইয়াকে খুন করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কাটা মুন্ডুটি বর্জ্য পদার্থ ফেলার জায়গায় নিয়ে যান অভিযুক্তই, কাটা মাথায় বেশ কয়েকবার লাথিও মারে সে। এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত অবৈধ কিউবান অভিবাসী ইয়োরডানিস কোবোস মার্টিনেজকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ। এবার সেই বীভৎস ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ট ট্রাম্প, শুরুতেই ওই অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে অভিযুক্তকে "আইনের সর্বোচ্চ পরিধিতে" বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সঙ্গে "আমেরিকাকে আবার নিরাপদ" করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। বলেছেন যে, তাঁর প্রশাসন অবৈধ "অভিবাসী অপরাধীদের" প্রতি "নরম" হবে না।
ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, "আমি টেক্সাসের ডালাসে একজন সম্মানিত ব্যক্তি চন্দ্র নাগমাল্লাইয়াকে হত্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত। তাঁকে কিউবার একজন অবৈধ অভিবাসী তাঁর স্ত্রী এবং ছেলের সামনে নির্মমভাবে শিরশ্ছেদ করেছিল। এই অভিযুক্তের আমাদের দেশে কখনও কোনওমতেই থাকা উচিত ছিল না।"
আমেরিকায় অভিবাসী সমস্যা বড়ে যাওয়ার জন্য় পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনকে দোষারোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের দাবি, খুনের অভিযুক্ত মার্টিনেজের সঙ্গে অপরাধমূলক ইতিহাস জড়িত, এ ধরনের অভিবাসীদের সমাজে মুক্তি দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছিলেন বাইডেন।
ট্রাম্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "এই ব্যক্তিকে পূর্বে শিশু যৌন নির্যাতন, গ্র্যান্ড থেফট অটো এবং মিথ্যা কারাদণ্ড-সহ ভয়াবহ অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।তাকে আমেরিকা তার নিজের দেশে ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, শেষপর্যন্ত সে আমেরিকাতেই থেকে যেতে পেরেছে- কারণ কিউবা তাদের দেশে এমন একজন দুষ্ট ব্যক্তিকে রাখতে চায়নি। নিশ্চিত থাকুন, এই অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের প্রতি নরম হওয়ার সময় শেষ, এবার নজরদারি রাখা হবে!"
ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড
নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর)। কর্নাটকে জন্ম বছর পঞ্চাশের চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া ডালাসে একটি মোটেলের ম্যানেজার ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই মোটেলের এক মহিলা কর্মী পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ও বছর সাঁইত্রিশের মার্টিনেজ একটি রুম পরিষ্কার করছিলেন। সেইসময় সেখানে আসেন চন্দ্র। একটি ওয়াশিং মেশিন খারাপ ছিল। ওই ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার না করার জন্য চন্দ্র নির্দেশ দেন। কিন্তু, তিনি সরাসরি মার্টিনেজের সঙ্গে কথা বলেননি। তাঁর নির্দেশ মার্টিনেজকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বলেন অন্য কর্মীকে। এতেই রেগে যান মার্টিনেজ।
পুলিশ জানিয়েছে, কিছুক্ষণ পর মোটেল থেকে চলে যান মার্টিনেজ। এরপর একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে ফিরে আসেন। চন্দ্রকে আক্রমণ করেন। নিজেকে বাঁচানোর জন্য দৌড়ে পালান ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই ব্যক্তি। তাঁর পিছু নেন মার্টিনেজ। সেইসময় স্বামীকে বাঁচাতে দৌড়ে আসেন চন্দ্রর স্ত্রী ও পুত্র। তাঁদের ঠেলে ফেলে দেন মার্টিনেজ। এরপরই ধারালো অস্ত্র দিয়ে চন্দ্রর মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেন।
একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কাটা মুন্ডুটি নিয়ে বর্জ্য পদার্থ ফেলার জায়গায় দিকে যাচ্ছেন মার্টিনেজ। সেখান থেকে পালানোর সময়ই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঘটনার নিন্দা করেছিল হাউস্টনে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেট। মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
অভিযুক্ত অবৈধ কিউবান অভিবাসী ইয়োরডানিস কোবোস মার্টিনেজের বিরুদ্ধে এর আগেও দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে। অটো চুরি ও হেনস্থার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।
শুক্রবার, মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) ঘোষণা করেছে যে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) আক্রমণকারীকে দেশ থেকে "অপসারণ" প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এক বিবৃতিতে, ডিএইচএসের সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলি বাইডেন প্রশাসনকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্যও অভিযুক্ত করেছেন। ডিএইচএসের মতে, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি, ২তদারকির আদেশে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত মার্টিনেজ ব্লুবোনেট ডিটেনশন সেন্টারে আইসিই ডালাসের হেফাজতে ছিলেন।
