আজকাল ওয়েবডেস্ক: কিয়েভের পেচেরস্কি জেলায় এক প্রশাসনিক ভবনের উপরে রাশিয়ার হামলার পর আগুন লাগে বলে রবিবার সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন ইউক্রেনের রাজধানীর সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো। ইউক্রেনীয় সরকারের মূল ভবন থেকে ঘন ধোঁয়া উঠছে। ফলে ফের নতুন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে চলেছে বলেই মনে করছেন সকলে।
রাশিয়ার রাতভর হামলায় কিয়েভে তিনজন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে একটি শিশু রয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রাজধানীর বহু ভবন যার মধ্যে সরকারের প্রধান কার্যালয়ও রয়েছে আগুনে পুড়ে যায়। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো জানান, প্রথমে ড্রোন শহরের ওপর ঝরে পড়ে হামলা শুরু হয়। এরপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের দাবিতেই সিলমোহর, কানাডায় খালিস্তানি জঙ্গি নিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
ক্লিচকো টেলিগ্রামে জানান, ড্রোন হামলায় শিশু ও এক তরুণী নিহত হন, আর গর্ভবতী এক নারীসহ পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ডানিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে সবুজে ঘেরা দার্নিৎসকি জেলায় এক বৃদ্ধা বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে মারা যান যা ছিল অন্য দুই মৃত্যুর স্থান।
রাষ্ট্রীয় জরুরি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দার্নিৎসকির চারতলা একটি আবাসিক ভবনের দুটি তলায় আগুন ধরে যায়। এতে ভবনটির একটি অংশ ধসে পড়ে। কিয়েভের পশ্চিমাঞ্চলের সভিয়াতোশিনস্কি জেলায় নয়তলা একটি আবাসিক ভবনের কয়েকটি তলা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে বলে ক্লিচকো ও জরুরি কর্মকর্তারা জানান।
পড়ে আসা ড্রোনের ধ্বংসাবশেষেও আগুন ধরে যায় একটি ১৬তলা আবাসিক ভবনে এবং আরও দুটি ৯ তলা ভবনে। জরুরি কর্মকর্তাদের প্রকাশিত সামাজিক মাধ্যমের ছবিতে দেখা যায় আবাসিক ভবন থেকে ধোঁয়া উঠছে। কিছু তলা আংশিকভাবে ধসে পড়েছে এবং দেয়ালের অংশ ভেঙে গেছে।
টেলিগ্রামে তকাচেঙ্কো বলেন, রাশিয়া “ইচ্ছাকৃতভাবে এবং সচেতনভাবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।” ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেমেনচুকে ডজনখানেক বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে টেলিগ্রামে জানান মেয়র ভিতালি মালেতস্কি।
ক্রিভি রিহ-তে রাশিয়ার হামলা পরিবহন ও নগর অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেক্সান্দর ভিলকুল। যদিও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ ইউক্রেনের ওডেসায় বেসামরিক অবকাঠামো ও আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টে আগুন ধরে গেছে বলে জানান আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ কিপার।
মস্কো এই হামলার বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি। উভয় পক্ষই ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে। যদিও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন। পশ্চিম ইউক্রেনে বিমান হামলার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় পোল্যান্ড তাদের নিজস্ব ও মিত্রবাহিনীর বিমান সক্রিয় করেছে আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলে জানিয়েছে পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড।
