আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজনীর ইতিহাসের ইতিহাসে জ্বল জ্বল করছে পেদ্রো লাসকুরাইনের নাম। এই রাজনীতিবিদ ১৯১৩ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৫ মিনিটের জন্য মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন! বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে পেদ্রো লাসকুরাইন হলেন সবচেয়ে কম সময়ের প্রেসিডেন্ট। 

পেদ্রো লাসকুরাইন ১৮৫৮ সালে মেক্সিকো সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। পেশাগতভাবে তিনি ছিলেন আইনজীবী। ক্রমেই  রাজনীতির বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে পেদ্রো মেক্সিকোর সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পদে বসেন। তিনি ১৯১০ সালে তাঁর নিজের শহরের মেয়র হন। তারপর থেকেই তাঁর উত্থান।

১৯১৩ সালে মেক্সিকো ভীষণ অস্থির। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শাসন ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট পোরফিরিও ডিয়াজ বহু আন্দোলনের চাপে শেষপর্যন্ত পদত্যাগ করেন। তিনি ফ্রান্সিসকো মাদেরো-কে প্রেসিডেন্ট্রের কুর্সিতে বসান। তবে, মাদেরোর প্রশাসন স্বল্পস্থায়ী ছিল। কারণ জেনারেল ভিক্টোরিয়ানো হুয়ের্তা একটি অভ্যুত্থান ঘটান। যাতেই কুোকাত হয় মাদেরোর প্রশাসন।

সেই সুযোগেই লাসকুরাইন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রবেশ করেন। লাসকুরাইন ছিলেন মাদেরো বিদেশমন্ত্রী। ভিক্টোরিয়ানো হুয়ের্তার চাপে মাদেরো এবং উপ-রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ক্ষমতা যায় হুয়ের্তার কাছে। ক্ষমতা দখলের পর হুয়ের্তা মাদেরোর বিদেশমন্ত্রী লাসকুরাইনেকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন। কিন্তু, ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার জন্য, হুয়ের্তার একজন 'অস্থায়ী প্রেসিডেন্টে'র প্রয়োজন ছিল। তিনি বেছে নেন লাসকুরাইনকে। জীবন বাঁচাতে এই পদক্ষেপে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পেদ্রো লাসকুরাইন।

পেদ্রো লাসকুরাইন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণ করেন। কিন্তু, মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে ফের ক্ষমতা দখল করেন ভিক্টোরিয়ানো হুয়ের্তা। তিনিই হন প্রেসিডেন্ট। 

তবে, হুয়ের্তার কর্মকাণ্ড সম্মানজনক ছিল না। তিনি রাষ্ট্রপতি মাদেরো এবং উপ-রাষ্ট্রপতি সুয়ারেজকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, পদত্যাগ করার পরে তাঁরা নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু  শেষ পর্যন্ত তাঁদের মৃত্যুদণ্ড হয়। 

লাসকুরাইনের অবস্থা কী হয়েছিল? লাসকুরাইন, হুয়ের্তার সঙ্গে সংঘাতে জড়াননি। লড়াই থেকে দূরে ছিলেন। তিনি ফের তাঁর আইন পেশায় ফিরে যান এবং নীরবে জীবন কাটাতে থাকেন। ১৯৫২ সালে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো লাসকুরাইন প্রয়াত হন।