আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাত্র ১৫ বছর বয়সে মারা গেল শিশু অভিনেতা উমর শাহ। তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে পাকিস্তানি বিনোদন জগৎ শোকাহত। দ্য ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উজ্জ্বল হাসি এবং পর্দায় উপস্থিতির জন্য স্মরণীয় ছিল ১৫ বছর বয়সী এই অভিনেতা। সোমবার ভোরে তার নিজের শহর ডেরা ইসমাইল খানে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় উমর।

পরিবারের সদস্য এবং ডাক্তাররা জানিয়েছে যে উমরের তীব্র বমি হচ্ছিল। এর ফলে তার ফুসফুসে তরল পদার্থ প্রবেশ করে যায় এবং অবশেষে মারাত্মক হৃদরোগের আক্রান্ত হয় সে। এর আগেও তার বাড়িতে একটি বিষাক্ত সাপ পাওয়া গিয়েছিল। সেই সাপের কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অঘটন ঘটল আহমেদের পরিবারে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ছোট বোন আয়েশাকে হারিয়েছিল আহমেদ।

সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে ভাইয়ের মৃত্যু সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেছেন আহমেদ শাহ। সে লিখেছে, “আমাদের পরিবারের ছোট্ট উজ্জ্বল নক্ষত্র উমর শাহ, সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে ফিরে গিয়েছে।” 

আরও পড়ুন: প্রস্রাবের দাম আড়াই কোটি! গরম স্যুপের পাত্রে মূত্রত্যাগ করে পরিবেশন করতে চেয়েছিল, দুই কিশোরের কীর্তিতে বিরাট জরিমানা

উমর প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে হৃদয় জয় করেছিল। প্রায়শই তাকে দাদার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানে দেখা যেত। এআরওয়াই ডিজিটালের জিতো পাকিস্তান এবং শান-এ-রমজানের মতো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলিতে তাদের উপস্থিতির মাধ্যমে তারা দ্রুত ঘরে ঘরে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠে। তাদের  পোশাক এবং কৌতুকপূর্ণ আচরণ, নিষ্পাপ রসবোধ, বিশেষ করে ভাইরাল ‘পিছে তো দেখো’ ক্লিপটি তাদের সকলের কাছে প্রিয় করে তুলেছিল।

উমর শাহের অকাল প্রয়াণের খবরে বিনোদন জগৎ এবং ভক্তরা মর্মাহত। পাকিস্তান জুড়ে সেলিব্রিটিরা শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন। জিতো পাকিস্তানের উপস্থাপক ফাহাদ মুস্তাফা প্রথম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি জানান, তরুণ তারকার মৃত্যুতে তিনি শোকাহত। প্রবীণ অভিনেতা আদনান সিদ্দিকী উমর জানিয়েছেন, এই ক্ষতি অপূরণীয় এবং তিনি গভীরভাবে ভেঙে পড়েছেন।

ওমরকে শান-এ-রমজানে উমরকে স্বাগত জানানো উপস্থাপক ওয়াসিম বাদামি, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার পর তার মৃত্যুর কারণটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন সকলকে। একই সঙ্গে আইজাজ আসলাম তাকে ‘একজন ছোট দেবদূত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উমরের ছটফটে ভাব এবং স্নেহ সকলকে মুগ্ধ করেছে।

মাহিরা খান, হিনা আলতাফ, মোমল শেখ, শায়েস্তা লোধি এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার সরফরাজ আহমেদও শোকের প্রকাশ করেছেন। শিশু ইনফ্লুয়েন্সার মুহাম্মদ শিরাজ  দৃশ্যত হতবাক। সে জানিয়েছে, মনে হচ্ছে নিজের কাউকে হারিয়ে ফেললাম।

উমরের শেষকৃত্যের নামাজ দারাবান রোডে অনুষ্ঠিত হয়। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং স্থানীয়রা শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। তাকে জাখোরি শরিফ কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার স্কুলের শিক্ষক ও কর্মীরা তার কবরে ফুল দিয়ে শোক প্রকাশ করেন এবং তার মৃত্যুকে একটি বিশাল ক্ষতি বলে বর্ণনা করেন।

উমরের কাকা এবং মেন্টর দানিয়াল শাহের মতে, আগের রাতে হঠাৎ তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। জানা গিয়েছে, উমর প্রচুর বমি শুরু করার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে আর বাঁচানো যায়নি।