আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রথমবারের মতো আমেরিকার মাটি থেকে তৃতীয় কোনও দেশের বিরুদ্ধে সরাসরি পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ও কার্যত দেশের সামরিক শাসক জেনারেল আসিম মুনির। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাম্পা শহরে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান যদি ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে ‘অস্তিত্ব সংকট’-এর মুখে পড়ে, তবে তারা “আধা দুনিয়া” ধ্বংস করে দেবে। প্রতিবেদনে দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্যাম্পার মাননীয় কনসাল আদনান আসাদ আয়োজিত এক নৈশভোজে মুনির বলেন,“আমরা একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। যদি আমরা বুঝি আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি, তবে আমরা আমাদের সঙ্গে আধা পৃথিবীকে নিয়ে শেষ করব।” এটি ইতিহাসে প্রথম উদাহরণ, যখন মার্কিন মাটি থেকে সরাসরি তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রকে পারমাণবিক হুমকি দেওয়া হলো।
সিন্ধু নদীর জল ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি
বক্তৃতায় মুনির ভারতের সিন্ধু নদী অববাহিকায় যেকোনো ধরনের পরিকাঠামো নির্মাণ ধ্বংসেরও হুমকি দেন। তিনি দাবি করেন, ভারতের এই প্রকল্পগুলো পাকিস্তানের জন্য পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করলে তা ২৫ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকে বিপন্ন করবে। তার ভাষায় — “আমরা অপেক্ষা করব ভারত কোনও বাঁধ বানানোর জন্য, আর একবার বানালে ১০টা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ওটা উড়িয়ে দেব… সিন্ধু নদী ভারতীয়দের পারিবারিক সম্পত্তি নয়। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনও ঘাটতি নেই, আলহামদুলিল্লাহ।”
প্রেক্ষাপট: পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা ও চুক্তি স্থগিত
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিলের প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার পর নয়াদিল্লি সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি কার্যত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তানের অভিযোগ, এ সিদ্ধান্তে তাদের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমেরিকা সফরের কূটনৈতিক দিক
এটি ছিল মুনিরের দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয় আমেরিকা সফর। গত ১৮ জুন তার আগের সফরে তিনি হোয়াইট হাউসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন এবং ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান’-এর জন্য ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার প্রস্তাব দেন। ট্যাম্পাতেও তিনি সেই প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন। আসিম মুনিরের এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষত যখন এটি একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তার মুখ থেকে এসেছে—তাও আবার আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে।
