আজকাল ওয়েবডেস্ক: গাজা ও কাশ্মীরকে এক পংক্তিতে ফেলতে মরিয়া শেহবাজ শরিফ! পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উপর জোর দিয়ে এক নিঃশ্বাসে কাশ্মীর সমস্যা এবং গাজা যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। লন্ডনে প্রবাসী পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্যে ভাষণে শরিফ কাশ্মীরের কথা তুলে ধরে বলেন, এখন ভারতেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি শত্রুতা বজায় রাখবে নাকি সুসম্পর্কের পথে হাঁটবে।

রবিবার শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান— দুজনই প্রতিবেশী, তাই সহাবস্থান করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এখন ভারতেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি শত্রুতা বজায় রাখবে নাকি সুসম্পর্কের পথে হাঁটবে। শাহবাজ মনে করিয়ে দেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হলে দুই দেশের সম্পর্ক কখনোই বাস্তব অর্থে এগোতে পারবে না। তিনি চড়া সুরে বলেন, "কোটি কোটি কাশ্মীরির রক্ত বৃথা যেতে দেব না।" 

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে প্রবাসী পাকিস্তানিদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন শাহবাজ শরিফ। সেখানে তিনি পাকিস্তানের অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সাফল্য, বিশ্বের সংকট এবং দেশের সাম্প্রতিক সাফল্য অর্জনের কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়েও দেন গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এই অনুষ্ঠানেই তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, "যদি কেউ বিশ্বাস করে যে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান না করে ভারত-পাকিস্তান সুসম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমরা চারটি যুদ্ধ করেছি, যার জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। সেই তহবিল পাকিস্তানের জনগণের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা উচিত ছিল।"

নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে শরিফের অভিযোগ, ভারত সহযোগী প্রতিবেশী হওয়ার পরিবর্তে যুদ্ধাপরাধীর মত আচরণে করে। শরিফের কথায়, "আমরা শান্তিতে থাকতে চাই, নাকি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাই, সেটা আমাদের উপর নির্ভর করে। আমরা একে অপরকে ভালবাসা এবং সম্মান করে বেঁচে থাকার ইচ্ছা রাখি।" 

এরপরই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গাজায় ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বলেন, "গাজায় ৬৪,০০০-এরও বেশি মানুষ প্রাণ দিয়েছে। তাদের খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা নিজেদের দেশেই উপার্জন করতে পারছে না। এই রক্তক্ষয় শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। চাই বা না চাই, এই সংঘর্ষ আমাদের দক্ষিণ এশিয়াকেও প্রভাবিত করবে।"

চলতি বছরের মে মাসেই ভারত-পাকিস্তান বড় ধরনের সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। পহেলগাঁওতে হামলার পরই গত ৭ মে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে 'অপারেশন সিঁদুর' অভিযান চালায় ভারতীয় বাহিনী। এই অভিযানে পাক সামরিক বন্দর ধ্বংস হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। পাল্টা আক্রমণ করেছিল পাক বাহিনীও। প্রায় ৮৭ ঘণ্টা স্থায়ী সেই সংঘাতে উভয় দেশই প্রাণহানি ও বিপুল সম্পদের ক্ষতি হয়। পরিস্থিতি এতটাই তীব্র হয়েছিল যে পারমাণবিক সংঘাতের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল। অবশেষে দুই দেশই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। এই মদ্যস্থতার দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

আরও পড়ুন- ‘বাতিল করতে হয়েছে বিয়ে, পরিবার ফেলে ছুটতে হয়েছে মাঝপথেই’, ট্রাম্পের ভিসা নির্দেশিকায় ভারতীয়দের অবস্থা জানেন?