আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই নিজেদের সারাদিনের নানা সময়ের নানা মুহূর্তের ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করেন। কেউ ব্লগ বানান, সারাদিন কী করছেন তা নিয়ে। কেউ ব্লগ বানান খাওয়া দাওয়া নিয়ে, কেউ গাছের পরিচর্যা নিয়ে। তবে সাম্প্রতিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই প্রতিবেদনের তথ্য, সাম্প্রতিককালে হাজার হাজার পুরুষ নিজেদের স্ত্রী' দের নগ্ন ছবি ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

জানা গিয়েছে, মূলত এই উদ্বেগের ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। সূত্রের খবর, সেখানকার স্থানীয় পুলিশ একটি গোপন ফেসবুক গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে, যেখানে বিবাহিত পুরুষ-সহ হাজার হাজার পুরুষ সম্মতি ছাড়াই মহিলাদের, প্রায়শই তাদের নিজেদের সঙ্গীর অন্তরঙ্গ ছবি, ভিডিও আপলোড করেছিলেন। জানা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার ওই গ্রুপের নাম দেওয়া হয়েছিল "মিয়া মোগলি"  যার বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায় আমার স্ত্রী। ২০১৯ সাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই গ্রুপ সক্রিয় এবং নিজেদের কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছে ওই গ্রুপের সদস্যরা।

 

আরও পড়ুনমুণ্ডু কেটে, দেহ ১৭ টুকরো, শহর জুড়ে স্ত্রীর দেহ ছড়িয়ে দিলেন স্বামী, আঁতকে ওঠা কারণ এল সামনে...

ওই প্রতিবেদনের তথ্য, তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই সময়কালে ৩২,০০০ এরও বেশি সদস্য রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের স্ত্রী, বান্ধবী এবং এমনকি অপরিচিত মহিলাদের ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার করেছেন গ্রুপের মধ্যে। অনেক ছবিতে নারীরা নগ্ন। কেউ খোলামেলা পোশাকে রোদ পোহাচ্ছেন কিংবা যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওইসব ছবি বা ভিডিও তুলেছেন তাঁদের সঙ্গীরাই। 

ওই পোস্টগুলি বেশিরভাগ সময়েই অশ্লীল কমেন্ট, মন্তব্যে ভরা ছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সেসব মন্তব্য সবই রেকর্ড হিসেবে তারা রেখেছে। মানহানি থেকে শুরু করে অনুমতি ছাড়া অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার নানা অপরাধমূলক কাজ করেছেন ওই গ্রুপের সদস্যরা, তেমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। ইতালির ডাক পুলিশের উপ-পরিচালক বারবারা স্ট্র্যাপাটোএই ঘটনা সম্পর্কিত ভয়াবহ তথ্য সামনে এনেছেন। 

মেটা এবং ইতালি পুলিশ গ্রুপটি বন্ধ করার দাবিতে ২০০০ টিরও বেশি অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করে। সতর্কতার ভিত্তিতে, ডাক পুলিশ একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করে এবং ২০ আগস্ট গ্রুপটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বন্ধের আগে, গ্রুপের বেনামী প্রশাসকরা বারবার ওই গ্রুপ এবং তাঁদের কার্যকলাপ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। নতুন গ্রুপ খোলার কথাও বলেছিলেন। পুলিশের সন্দেহ নতুনভাবে তাঁরা আবার গ্রুপ খুলে এই ধরনের কার্যকলাপ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।  একইসঙ্গে উল্লেখ্য, বন্ধ থাকা সত্ত্বেও, হাজার হাজার স্ক্রিনশট এবং ছবি ইতিমধ্যেই অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছিল, যার ফলে নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

 

ইতালিতে ২০১৯ সাল থেকে এই ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে একটি আইন রয়েছে, যাকে সাধারণত "প্রতিশোধমূলক পর্ন" বলা হয়। এই আইনে সম্মতি ছাড়া যৌন স্পষ্ট ছবি শেয়ার করার জন্য দোষী সাব্যস্তদের জন্য ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।