আজকাল ওয়েবডেস্ক: মালয়েশিয়ার কেলান্তানের কাদোক এলাকায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। নিজ হাতে লালন করা প্রিয় চারোলাইস প্রজাতির গরুর গুঁতোয় গুরুতর রক্তক্ষরণে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী মহাম্মদ আমিন সুলায়মান। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার বিকেল প্রায় ৫টা ৩০ মিনিটে, কাদোকের কাম্পুং বুনুত সাতুত গ্রামে। ঘটনার সময় বৃদ্ধ তার ৩০০ কিলোগ্রাম ওজনের গরুটিকে খাবার ও জল দিচ্ছিলেন।

আরও পড়ুন:  ঘুমের সময় এই একটি ভুলেই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি! জানেন কীভাবে ঘুমালে হার্টের রোগীরা থাকবেন নিরাপদ?

ঘটনাটি কিভাবে ঘটল?

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক ঘণ্টা আগেই আমিন সুলায়মান ও তার ছোট ভাই মুস্তাফা (৬৬) গরুটির নাকে নতুন দড়ি লাগান, কারণ আগের দড়িটি ছিঁড়ে গিয়েছিল। দড়ি ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে গরুটিকে বাড়ির প্রায় ১০ মিটার দূরে একটি দুকু গাছে বেঁধে রাখা হয়েছিল। মুস্তাফা বলেন, “আমার ভাই গরুটিকে জল ও খাবার দিয়ে গেলেন, আর আমি আসরের নামাজ পড়তে উপরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পাই।” দৌড়ে নিচে এসে তিনি দেখেন, গরুর শিংয়ে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ভাইয়ের বাঁ পায়ের পেশি থেকে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তিনি কয়েক মিটার হাঁটতে পেরেছিলেন, তারপর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যান। এই মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তাঁকে কবর দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা ছুটে এসে সাহায্য করেন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা এসে বৃদ্ধের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সেদিন রাতেই, প্রায় রাত ১১টার দিকে, মৃতদেহ স্থানীয় কাম্পুং বুনুত সাতুত ইসলামিক কবরস্থানে কবর দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:  কোনও দৈত্য যেন ধনুকের মতো বাঁকিয়ে দিয়েছে শত শত গাছের মাথা, এই অদ্ভুত বনের রহস্য আজও ভেদ করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা

ঘটনার পর গরুটি বিক্রি করে দেন তাঁর ভাই। মৃতের ভাই মুস্তাফা সাংবাদিকদের জানান, এই গরুটি ছিল তার ভাইয়ের অত্যন্ত প্রিয় পোষা প্রাণী। মাত্র তিন বছর আগে ১,৫০০ রিঙ্গিতে কেনা হয়েছিল এটি। তিনি বলেন, “গরুটি কখনো আক্রমণাত্মক ছিল না। আমরা মনে করছি, নাকে নতুন দড়ি লাগানোর কারণে বিরক্ত হয়ে এমন আচরণ করেছে।” তবে ভাইয়ের মৃত্যুর পর আতঙ্কিত হয়ে তিনি পরদিনই গরুটি ৩,৫০০ রিঙ্গিতে বিক্রি করে দেন। তার ভাষায়, “ভাইয়ের আদরের গরুটি হলেও, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির ভয় ছিল। তাই কষ্ট হলেও বিক্রি করতে হয়েছে।” শেষে গরুটি নতুন মালিক কিনে নেন এবং শুক্রবার সেটি জবাই করে স্থানীয় বাজারে মাংস বিক্রি করা হয়। এভাবেই এক প্রিয় পোষা প্রাণী রূপ নিল ট্র্যাজেডিতে, আর গ্রামের মানুষ এখনও সেই ঘটনার রেশে শোকাহত।