আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের নাম হচ্ছে আল-মুরাবিতুন। আরবি ভাষায় যার অর্থ  'ইসলামের রক্ষক'। গোয়েন্দা সূত্রগুলি এই সপ্তাহে এনডিটিভিকে জানিয়েছে যে, জইশের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের ভাই ইউসুফ আজহারের 'স্মৃতিস্তম্ভ' উন্মোচনের সময় আগামী সপ্তাহে সংগঠনের নতুন নামটি ব্যবহার করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে যে, ২০০১ সালে ভারতীয় সংসদে হামলা, ২৬/১১ মুম্বই হামলা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের উরি ও পুলওয়ামায় সেনাবাহিনীর উপর হামলার জন্য দায়ী জঙ্গি গোষ্ঠী 'জইশ-ই-মহম্মদ'। গোটা বিশ্বেই এই সংগঠন নিষিদ্ধ। ফলে অতি পরিচিত জইশ-ই-মহম্মদ নামে তহবিল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ছে। পাকিস্তানও মুখরক্ষায় প্রকাশ্য়ে এই সংগঠনকে সহায়তা করতে পারেন না। এইসব অসুবিদা দূর করতেই জইশের নতুন নামকরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ সংগঠনের নয়া নামকরণ কেবল একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।

বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তহবিল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) জুলাইয়ের এক প্রতিবেদনে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর মুখোমুখি তহবিল চ্যালেঞ্জের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এফএটিএফ জানিয়েছে যে, জইশ এখন ডিজিটাল পেমেন্ট, অর্থাৎ ই-ওয়ালেট এবং ইউপিআই ট্রান্সফার ব্যবহার করে নিজেদের পুনর্গঠনে অর্থ ব্যবহার করছে।

এফএটিএফ অনুসারে, এখন পর্যন্ত পাঁচটি ই-ওয়ালেট শনাক্ত করা হয়েছে এবং প্রতিটিরই জঙ্গি গোষ্ঠী এবং প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সংগঠনের লক্ষ্য হল প্রায় চার বিলিয়ন পাকিস্তানি টাকা সংগ্রহ করা- যাতে ৩০০ টিরও বেশি 'মারকাজ' অর্থাৎ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা কেন্দ্র স্থাপন করা যায়।

ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের অর্থ হল- পাকিস্তান বলতে পারে যে তারা এফএটিএফ নিয়ম মেনে চলে 'ব্যাঙ্ক তহবিল বন্ধ' করেছে, কিন্তু প্রকৃতঅর্থে জইশ এখনও অর্থ পায়।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এই সপ্তাহে একটি ডসিয়ার অ্যাক্সেস করেছে, যেখানে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জইশের ঘাঁটি ভারত অপারেশন সিঁদুর অভিয়ানের সময় ধ্বংস করার পর পুনর্গঠনের প্রচেষ্টার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার জবাবে ভারত গত ৭ মে বাহাওয়ালপুর-সহ নয়টি পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি শিবিরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।

ডসিয়ার থেকে বোঝা যায় যে জইশ-ই-মহম্মদ এবং হাফিজ সইদের হিজবুল মুজাহিদিন-সহ অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তানের আরও গভীরে ফের অবস্থান শুরু করেছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনগুলি।

পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই গোষ্ঠীটি একটি নিয়োগ অভিযানও চালাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে, ১৪ সেপ্টেম্বর মানসেহরা জেলার গাড়ি হাবিবুল্লাহ শহরেও এমন একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।

জইশ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরির নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছিল, যার বক্তৃতায় পাকিস্তানের মাটিতে পরিচালিত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্রেরল পর্দা ফাঁস হয়েছে - দুবাইতে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচের সাত ঘন্টা আগে এই অভিযান চালানো হয়েছিল এবং পাক সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সুরক্ষা প্রদান করেছিল।

আরও পড়ুন-  পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বড় ঘোষণা, এবার ভারতের পদক্ষেপ কী হবে

আরও পড়ুন- মার্কিন মুলুকে এবার গোল্ড কার্ড ভিসা চালু করে দিলেন ট্রাম্প, কারা আবেদনের যোগ্য বা কতদিন থাকতে পারবেন জেনে নিন