আজকাল ওয়েবডেস্ক: পার্কে একটি মনোরম সন্ধ্যা কাটাতে গিয়েছেন মৃদু বাতাস বইছে, হাতে এক কাপ চা। সেই কাপে চুমুক দিতেই কানের পাশে একটি শব্দ ভেসে এল। হাত চালিয়ে দেখতে পেলেন একটি মশা কানের সামনে ভনভন করছিল। 

ভারতের প্রায় সর্বত্রই মশা দেখা যায়, কেরলের উপকূল থেকে শুরু করে দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহর, এমনকি কাশ্মীরেও। কিন্তু পৃথিবীতে একটি দেশ রয়েছে যেখানে কোনও মশা নেই। হ্যাঁ, আইসল্যান্ডই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে কোনও ধরণের মশা নেই।

আইসল্যান্ডে কোন সাপ বা অন্যান্য সরীসৃপ নেই। এই কারণেই আইসল্যান্ডকে ‘সাপমুক্ত দেশ’ বলা হয়। সবচেয়ে মজার তথ্য হল আইসল্যান্ডে হ্রদ, পুকুর, জলাভূমি এবং প্রায় ১৩০০ প্রজাতির বিভিন্ন প্রাণী রয়েছে, তবুও মশা বেঁচে থাকে না। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আইসল্যান্ডের দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়া এবং ঠান্ডা জলবায়ুতে মশা বেঁচে থাকে না। যার ফলে মশার ডিমের বিকাশ এবং ডিম ফুটে লার্ভা হওয়া কঠিন। আইসল্যান্ড তাই শান্তিপূর্ণ- মশা নেই, সাপ নেই, কেবল পরিষ্কার, শীতল প্রকৃতি।

সাধারণত, মশা অগভীর, স্থির জলে বংশবৃদ্ধি করে, যেখানে তাদের ডিম ফুটে লার্ভা তৈরি হতে পারে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন তারা সাধারণত একটি উপযুক্ত এবং স্থিতিশীল তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। কিন্তু আইসল্যান্ডের পরিস্থিতি আলাদা। সে দেশে জমে থাকা জল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং দ্রুতগতির জল ব্যবস্থার কারণে, মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয় না।

আইসল্যান্ডে ঘরবাড়ির তুলনায় মানুষ এবং জায়গা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, যার অর্থ মশার বংশবৃদ্ধির জন্য মানুষের তৈরি পরিবেশ প্রায় নেই। আইসল্যান্ডের তাপমাত্রা খুব কম হওয়ায় মশা ডিম পারতে পাড়ে না সেখানে। আইসল্যান্ডে রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই পরিস্থিতিতে মশা জৈবিকভাবে বেঁচে থাকতে বা বংশবৃদ্ধি করতে অক্ষম। মজার বিষয় হল, আইসল্যান্ডে এমন একটি পোকা আছে যা দেখতে অনেকটা মশার মতো, কিন্তু আচরণ এবং প্রকৃতিতে একেবারেই আলাদা। এটি কামড়ায় না এবং রোগ ছড়ায় না।