আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে মারাত্মক বিস্ফোরণের এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর পাকিস্তানের নেতা চৌধুরী আনোয়ারুল হক ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্তপার সন্ত্রাসে পাকিস্তানের জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করেন। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান ভারতকে “লালকেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল পর্যন্ত” আঘাত করেছে।
হকের এই মন্তব্যের প্রসঙ্গ আসে ১০ নভেম্বর ঘটে যাওয়া সেই উচ্চ-তীব্রতার বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে একটি ধীরগতির গাড়ি বিস্ফোরিত হয়ে লালকেল্লা মেট্রো এলাকার বড় অংশ ধ্বংস করে দেয় এবং অন্তত ১৫ জন নিহত হন। তিনি কাশ্মীরের জঙ্গল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে পাহালগামের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিরা ২৬ জন পর্যটককে হত্যা করেছিল।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মন্ত্রী হক, যিনি সম্প্রতি অনাস্থা প্রস্তাবে ক্ষমতাচ্যুত হন, সোমবার PoK অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, যদি তোমরা (ভারত) বালুচিস্তানকে রক্তাক্ত করতে থাকো, আমরা লালকেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল পর্যন্ত ভারতকে আঘাত করব—এবং আমাদের শাহিনরা তা করেছে। ওরা এখনও লাশ গুনে শেষ করতে পারছে না।”
হকের এই মন্তব্য আসে এমন সময়, যখন দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই বিভিন্ন রাজ্যে—জম্মু ও কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে—জইশ-ই-মহম্মদ এবং আন্সার গজওয়াত-উল-হিন্দের সঙ্গে যুক্ত একটি “হোয়াইট-কলার টেরর মডিউল” থেকে ২,৯০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার করে ভারতীয় সংস্থাগুলি।
এদিকে পাকিস্তানের ফেডারেল সরকার হকের বক্তব্য থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে, এবং এটিকে “ক্ষমতাচ্যুত এক নেতার রাজনৈতিক ভুল” বলে বর্ণনা করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, হকের এই প্রকাশ্য মন্তব্য ভারতের সেই দীর্ঘদিনের অভিযোগকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে—যে পাকিস্তানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ভারতের বিরুদ্ধে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলাগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, এবং সীমান্তপার সন্ত্রাসের পেছনে তাদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে।
পাহালগাঁও হামলার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আবারও তলানিতে পৌঁছায়। ভারতের কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে পরিচালিত অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান ও PoK-এ থাকা সন্ত্রাসী কাঠামোকে লক্ষ্য করে ১০০-রও বেশি জঙ্গিকে হত্যা করা হয়। এর পর টানা চার দিন সীমান্তে গোলাগুলি চলার পর ১০ মে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির নতুন বোঝাপড়া হয়।
দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে হরিয়ানার আল-ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয় এখন কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তদের অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বা কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয়টির সম্ভাব্য সন্ত্রাস নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ আত্মঘাতী হামলাকারী ড. উমার-উন-নাবির নষ্ট হয়ে যাওয়া মোবাইলটি উদ্ধার করে। ডিভাইস থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্য অনুযায়ী, হামলার ঠিক আগে তিনি একটি ভিডিও রেকর্ড করেন, যেখানে তিনি এটিকে “শহীদী মিশন” বলে আখ্যা দেন।
এদিকে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) শ্রীনগর থেকে জাসির বিলাল ওয়ানিকে ওরফে দানিশকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ড্রোন পরিবর্তন করে সন্ত্রাসী হামলার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতেন এবং বিস্ফোরণের আগেই রকেট তৈরির চেষ্টা করছিলেন।
