আজকাল ওয়েবডেস্ক: চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগান দিয়ে মিছিলের আদলে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে ১২ তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা ও বিতর্ক। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। আটকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের খোয়াজনগরের কালা মিয়ার দোকান এলাকায়। আটকরা হলেন: মো. সাইফুল ইসলাম (১৯), আব্দুর রহমান জাহেদ (১৮), আরাফাত হোসেন মিনহাজ (১৮), আশরাফুল জামাল রিয়াদ (১৮), ফরকান (১৯), ইয়াসিন আরাফাত (১৮), আব্দুল করিম আদর (১৮), আবু হাসনাইন বিজয় (১৮), মো. ইকবাল (১৯), আশিকুল ইসলাম আকাশ (১৮), শরিফুল ইসলাম (১৮), ও আকিফুল ইসলাম আকিব (১৮)। তারা সবাই চরপাথরঘাটা ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবকেরা রাস্তার ওপর “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগান দিতে দিতে একটি ভিডিও ধারণ করছিলেন, যা দেখতে অনেকটাই রাজনৈতিক মিছিলের মতো লাগছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওটি তখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হয়নি। আটকদের পরিবার বলছে, বিষয়টি নিছক সামাজিক মাধ্যমে ‘ফান কনটেন্ট’ তৈরির উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। রাজনীতির সঙ্গে কারও কোনও সম্পর্ক নেই। আটক যুবক জাহেদের বাবা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ওরা মজার ছলে ভিডিও বানিয়েছিল, কেউই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। কেউ হয়তো শত্রুতা করে পুলিশের কাছে খবর দিয়ে ওদের ফাঁসিয়েছে।”
জানা গেছে, আটক যুবকেরা “চুলকানি বাহিনী ফানি এন্টারটেইনমেন্ট” নামে একটি ফেসবুক পেজ চালান, যেখানে মাঝে মাঝে হাস্যরসাত্মক ভিডিও আপলোড করেন তারা। এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহম্মদ শরীফ বলেন, “ঘটনাটিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তারা যে ভঙ্গিতে স্লোগান দিচ্ছিল, তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।” ঘটনার সূত্র ধরে স্থানীয় সমাজে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, এটি কেবল কিশোরদের কৌতুক ভিডিও—শাস্তির প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, “জয় বাংলা” জাতীয় স্লোগান নিয়ে এই ধরনের আচরণ অমার্জনীয় এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এদিকে, পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। তরুণদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা মানবিক বিবেচনায় বিচার চেয়েছেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা ইউনুস সরকার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নতুন শাসকগোষ্ঠী একদিকে মৌলবাদীদের সরাসরি মদত দিচ্ছে, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের উপর দমনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। “জয় বাংলা”, “জয় বঙ্গবন্ধু” জাতীয় স্লোগানকে এখন রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা হিসেবে চিহ্নিত করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। মুজিবের আদর্শ, ভাষণ, ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রাষ্ট্রীয় নথি থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও প্রাপ্ত অধিকার হরণ করা হচ্ছে প্রশাসনিক নানা ছলে। ইউনুস সরকার একপ্রকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করে মৌলবাদী শক্তিকে নতুন করে সংগঠিত করতে চাইছে, যা দেশের প্রগতিশীল সমাজ ও সাংবিধানিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত। অনেকেই একে বাংলাদেশ রাষ্ট্রগঠনের মূল চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন।
