আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্পর্ক মানে তাতে যেমন ভালবাসা থাকে, তেমনই থাকে রাগ-অভিমানের পালাও। কখনও পারিবারিক সমস্যা, কখনও আবার একে অপরকে সময় দিতে না পারার জন্য সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। অনেক দাম্পত্যে আবার কলহ বাধে যৌন পরিতৃপ্তি না পাওয়ার কারণে। সেই পরিতৃপ্তির খোঁজেই অনেকে এখন ঝুঁকেছেন ‘আদর পুতুল’-এর দিকে। কিন্তু সেই ঝোঁক যে এত বড় পরিণতি ডেকে আনতে পারে তা স্বপ্নেও ভাবেননি অ্যারিজোনার এই ব্যক্তি।

অ্যারিজোনার ৩৮ বছর বয়সী আসেনসিও লার্গো তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। পথে তিনি একটি আদর পুতুলের দোকান দেখতে পান। সেটি দেখেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন তিনি। বাচ্চাদের গাড়িতে রেখেই সেই দোকানে চলে যান। এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা কেটে যায় কিন্তু তাঁর আর ফেরার কথা মনে থাকে না। তিনি এও ভুলে গিয়েছিলেন যে গাড়িতে তিনি তাঁর চার সন্তান রেখে এসেছেন। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ, এসি বন্ধ। এমনকি জানালার কাঁচও তোলা। এই রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের জন্য পুলিশ আসেনসিওকে গ্রেপ্তার করেছে।

দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্টের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ জুলাই বিকেল ৩টে ৪০ মিনিটে। সেই সময় অ্যারিজোনার তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একাধিক ফোন কল পাওয়ার পর পুলিশ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে।

আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুর, সংঘর্ষবিরতি, পহেলগাঁও কূটনীতি..., বিরোধীদের পাঁচ প্রশ্ন কীভাবে সামাল দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা

আধিকারিকরা ওই প্রাপ্তবয়স্কদের দোকানটির পার্কিং লটে পৌঁছে দেখেন যে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গাড়ির ভিতরে বাচ্চাদের আটকে রাখা হয়েছে। ফিনিক্স পুলিশ জানিয়েছে, “২৪তম স্ট্রিট এবং ম্যাডিসন স্ট্রিটের কাছে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পার্কিং লটে পুলিশ দেখতে পায় যে গাড়িটি চলছে না। অফিসাররা যখন সেখানে পৌঁছন, তখন তাঁরা গাড়িতে একাধিক শিশুকে দেখতে পান। অফিসাররা গাড়িতে প্রবেশ করতে সক্ষম হন এবং শিশুদের নিরাপদ ভাবে বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হন।”

পুলিশ চারটি শিশুকে উদ্ধার করে। যাদের বয়স যথাক্রমে দুই, তিন, চার এবং সাত বছর। গাড়ির ভিতরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ৫১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)-এ পৌঁছেছিল। সার্জেন্ট রব শেরার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “শিশুগুলির মধ্যে অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীর খারাপের লক্ষণ দেখা গিয়েছে। গায়ের রঙ বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ত্বক উজ্জ্বল লাল হয়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া ইত্যাদি। স্পষ্টতই, প্রবল তাপ শিশুদের উপর প্রভাব ফেলছিল।” শিশুদের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পুলিশ এসইউভিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে জল দেওয়া হয়েছিল।

তাদের উদ্ধারের পর, যখন পুলিশ তাদের অভিভাবককে খুঁজতে শুরু করে, তখন পুলিশ তাদের বাবাকে আদর পুতুলের দোকানের ভিতরে খুঁজে পায়। অ্যাসেনসিও এক ঘণ্টা ধরে দোকানের ভিতরে ছিলেন। অফিসাররা আরও লক্ষ্য করেন যে তাঁর মুখ থেকে মদের গন্ধ বার হচ্ছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে যে তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্সে দেখা গিয়েছে যে তাঁর গাড়িতে ইগনিশন ইন্টারলক লাগানো উচিত ছিল। কিন্তু সেটি তাঁর গাড়িতে ছিল না।

ম্যারিকোপা কাউন্টি কমিশনার জেন ম্যাকলাফলিন আদালতের শুনানির সময় জানিয়েছেন, আসেনসিও প্রথমে তাঁর গাড়ি চিনতে অস্বীকার করেছিলেন। ম্যাকলাফলিন বলেন, “এহেন আচরণ বেপরোয়া অপরাধবোধের ইঙ্গিত দেয়। এটা বলা কঠিন যে অ্যারিজোনায় বেড়ে ওঠা কেউ জানে না যে শিশু এবং কুকুর বন্ধ গাড়িতে মারা যায়।” অ্যাসেনসিওর বিরুদ্ধে চারটি শিশু নির্যাতন এবং চারটি বিপদে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।