আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাসোগ্গির হত্যার বিষয়ে নাকি কিছুই জানতেন না সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। এমনটাই দাবি করে বসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রসঙ্গত, অতীতে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাই দাবি করেছিল, খাসোগ্গিকে বন্দি করা বা হত্যার নেপথ্যে সৌদি যুবরাজের যোগ থাকতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প এই নতুন দাবি করে নিজের দেশেরই গোয়েন্দা রিপোর্টকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন।
এটা ঘটনা সৌদির সাংযাদিক খাসোগ্গি কর্মজীবনের শেষ দিকে আমেরিকায় কর্মরত ছিলেন। সৌদি রাজপরিবারের সমালোচনায় নিয়মিত লিখতেন তিনি। সেই খাসোগ্গি ২০১৮ সালে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে সৌদির দূতাবাসের ভিতরে প্রবেশ করে আর বেরোননি। পরে তাঁর মৃত্যুর খবর মেলে। অভিযোগ, সৌদি দূতাবাসের ভিতরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠে, ওই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে সৌদির যুবরাজের মদত রয়েছে। খাসোগ্গির হত্যাকাণ্ড ঘিরে ওই সময় তোলপাড় হয়েছিল আমেরিকায়।
এদিকে, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পরে মঙ্গলবার আমেরিকা সফরে গিয়েছেন সৌদির যুবরাজ সলমন। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে বসে বৈঠকও করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে দু’জনের আলোচনার সময়ে উঠে আসে খাসোগ্গি কাণ্ডের প্রসঙ্গও। তাতে কিছুটা বিরক্ত দেখায় ট্রাম্পকে। খাসোগ্গিকো এক জন ‘অত্যন্ত বিতর্কিত’ ব্যক্তি বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। কিছুটা জোর দিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, সলমন এ সবের কিছুই জানতেন না। হোয়াইট হাউসের অতিথিকে বিব্রত করার জন্যই এই প্রসঙ্গটি তোলা হয়েছে বলে দাবি করে বসেন ট্রাম্প।
ওই রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক জানতে চান, সৌদির যুবরাজকে কীভাবে বিশ্বাস করবেন আমেরিকাবাসী। সেই প্রশ্নেই মেজাজ হারান ট্রাম্প। বলে দেন, ‘আপনারা মিথ্যা কথা বলছেন।’ খাসোগ্গি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি এমন একজনের কথা বলছেন যিনি অত্যন্ত বিতর্কিত ব্যক্তি ছিলেন। আপনি যাঁর কথা বলছেন, তাঁকে অনেকেই পছন্দ করতেন না। আপনি তাঁকে পছন্দ করুন বা না করুন...এ সব হয়ে থাকে।’ এর পরে যুবরাজ সলমনের দিকে তাকিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উনি (সলমন) কিছুই জানতেন না। এ বার এ বিষয়টি আমাদের এখানেই থামিয়ে দেওয়া উচিত। আমাদের অতিথিকে এ ধরনের প্রশ্ন করে আপনি (সাংবাদিকের উদ্দেশে) বিব্রত করবেন না।’ এদিকে ট্রাম্পের পাশে বসে সলমন বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা এবং একটি বড় ভুল। তদন্তের জন্য আমরা সকল পদক্ষেপ করেছি। এমন ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে, তার জন্যও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
এদিকে, ২০১৮ সালের সেই হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ ফের আলোচনায় উঠে আসার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন খাসোগ্গির স্ত্রী হানান এলাটর খাসোগ্গি। ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘আমার স্বামীকে হত্যা করার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। জামাল (খাসোগ্গি) একজন ভাল, সোজাসাপ্টা এবং সাহসী মানুষ। অনেকেই তাঁর মতামত এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে একমত নাও হতে পারেন। যুবরাজ বলছেন তিনি দুঃখিত। তাহলে তাঁর উচিত আমার সামনে এসে আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া। আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা মিটিয়ে দিতে হবে তাঁকে।’
