আজকাল ওয়েবডেস্ক: ট্রাম্প প্রশাসনের বেশিরভাগ আরোপিত শুল্ক অবৈধ বলে রায় দিয়েছে ফেডারেল আপিল আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের কাগজপত্রে, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিয়েছে যে অতিরিক্ত শুল্ক আদতে ইউক্রেনে মার্কিন শান্তির প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

মার্কিন প্রসাসন সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, "প্রেসিডেনট সম্প্রতি রাশিয়ার জ্বালানি পণ্য কেনার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের অনুমোদন করেছেন। রাশিয়া থেকে শক্তিসম্পদ কেনার কারণে আমরা ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়েছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমস্যা মোকাবিলা করতেই এই শুল্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"  

পিটিশনে উল্লেখ রয়েছে, শুল্কের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি "ধনী জাতি" এবং শুল্ক না নিলে একটি "দরিদ্র জাতি"তে পরিণত হবে। ফাইলিংয়ে বলা হয়েছে, "প্রেসিডেন্টের মতে, এক বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি মৃত দেশ ছিল, এবং এখন, যেসব দেশ আমাদের খারাপভাবে শোষন করেছে তাদের মাদ্যমেই ট্রিলিয়ন ডলার প্রদানের কারণে, আমেরিকা আবার একটি শক্তিশালী, আর্থিকভাবে পোক্ত এবং সম্মানিত দেশে পরিণ হবে।" 

গত ২৭শে আগস্ট, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতের উপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করেছে। এই বর্ধিত শুল্কের ২৫ শতাংশ, রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য বিশেষ আইন (IEEPA) ব্যবহার করে ভারতের উপর প্রেসিডেন্টের শাস্তি। বাকি অর্ধেকটি ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত "আমেরিকা ফার্স্ট" বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে।

গত সপ্তাহেই মার্কিন আপিল আদালত রায়ে জানিয়ে দেয়, বিভিন্ন দেশের উপরে চাপানো ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্কই 'বেআইনি'। তবে তাঁর আরোপিত শুল্কে স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। অক্টোবর পর্যন্ত এই শুল্কই বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। 

এই রায়ের বিরোধিতা করে ট্রাম্প বলেন, "যদি শুল্ক তুলে নেওয়া হয়, তাহলে সেটা আমাদের দেশের জন্য একটা বিপর্যয় ডেকে আনবে। এর ফলে আমরা আর্থিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ব। আমাদের শক্তিশালী হতে হবে।" আরও যোগ করেন যে, তিনি সুপ্রিম কোর্টের 'সহায়তা' নিয়ে নিম্ন আদালতের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। মার্কিন আপিল আদালতের রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

জানুয়ারিতে, ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (IEEPA) ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যকারী দেশগুলির উপর "পারস্পরিক শুল্ক" আরোপ করেছিলেন। তবে, রায়ে বলা হয়েছে যে, আইন অনুসারে রাষ্ট্রপতি ঘোষিত জাতীয় জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তবে এই পদক্ষেপগুলির কোনওটিতেই শুল্ক, শুল্ক বা কর আরোপের ক্ষমতা জড়িত নয়।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট মন্তব্য করেছিলেন যে, শুল্কের কার্যকারিতা স্থগিত করা "বিপজ্জনক কূটনৈতিক বিব্রতকর অবস্থার দিকে নিয়ে যাবে।"

আরও পড়ুন-  ভারতে রেকর্ড হারে কমল শিশুমৃত্যু, ১০ বছরে হ্রাস ৩৭ শতাংশের বেশি! বাস্তবের সঙ্গে পরিসংখ্যান সামঞ্জস্যপূর্ণ?