সমীর ধর
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর লাগাতর হিংস্র হামলার প্রতিবাদে উত্তাল আগরতলা। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি অঞ্চলে পুনর্বাসনের নামে বসিয়ে দেওয়া বাঙালি মুসলমানদের সঙ্গে আদিবাসীদের দ্বন্দ্ব সংঘাত নতুন নয়। এই সংঘাত বন্ধ করতে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বর্তমানে নতুন উদ্যোমে হামলা শুরু হয়েছে। অভিযোগ, গত কয়েকদিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার গ্রামে গ্রামে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদতে ইসলামী মৌলবাদীরা চাকমা,মার্মা, ত্রিপুরী, মগ ইত্যাদি জনজাতি সম্প্রদায়ের শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।
সেনাবাহিনীর গুলিতে একটি ত্রিপুরী ছাত্র সহ বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক বৌদ্ধবিহার। এর প্রতিবাদে শনিবার সারা দিন আগরতলা শহরে দফায় দফায় মিছিল ও বিক্ষোভ হয়। ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন-সহ বিভিন্ন উপজাতীয় সংগঠনের ডাকে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান থেকে বেশ বড় মিছিল বেরিয়ে শহর পরিক্রমা করে। রাজ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মিছিলে অংশ নেন। শহরের বুদ্ধমন্দির থেকে শুরু হওয়া আরেকটি প্রতিবাদ মিছিলে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরাও শামিল হন।
অন্যদিকে, কুঞ্জবনে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এবং পরে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় রাজ্যের শাসক জোটের শরিক তিপ্রা মথা পার্টির যুব সংগঠন ইয়ুথ ত্রিপুরা ফেডারেশন। প্রতিটি কর্মসূচি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই বর্বরোচিত আক্রমণ বন্ধ করা, শান্তি ও সম্প্রীতি সুনিশ্চিত করা, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি দাবি জানানো হয়। ভারত সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-কে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে আলোচনার দাবি ওঠে।
এদিকে, তিপ্রা মথা সুপ্রিমো ত্রিপুরার মানিক্য রাজবংশের উত্রাধিকারী প্রদ্যোতবিক্রম কিশোর দেববর্মা সামাজিক মাধ্যমে ভারত সরকারকে বাংলাদেশের চলতি ঘটনাবলি রাষ্ট্রসংঘে উত্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের ভিলেজ কমিটি সমূহের নির্বাচনের আগে ২৬ সেপ্টেম্বর আগরতলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল জমায়েতের ডাক দিয়েছে তিপ্রা মথা পার্টি।
