আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্নীতির অভিযোগে পদ থেকে সহকারীকে অপসারণের ২৪ ঘণ্টা পর, বুধবার হায়দরাবাদের জুবিলি হিলসে পরিবেশমন্ত্রী কোন্ডা সুরেখার বাড়িতে পুলিশ উপস্থিত হয়। ঠিক তার পরেই তেলেঙ্গানার ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করে। প্রকাশ্যে শাসক দলের গোষ্ঠী বিভাজন সামনে আসায় তীব্র অস্বস্তিতে হাত শিবির। সুরেখার বাড়িতে পুলিশ কেন? কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, কোন্ডা সুরেখার প্রাক্তন সহযোগী এন সুমন্তকে খুঁজতে পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল।

সুরেখা ওয়ারাঙ্গলের কংগ্রেস সাংসদ এবং ওবিসি নেত্রী। অন্যদিকে, সুমন্তর বিরুদ্ধে ডেকান সিমেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের এক কর্মকর্তার কাছ হুমকি দিয়ে বিপুল টাকা নেওয়ার অভিযোগ। তা নিয়েই তোলপাড়। তাঁদের মেয়ে সুস্মিতার অভিযোগ আবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির দিকে। অভিযোগ, রেবন্ত তাঁর পরিবারকে সরাসরি টার্গেট করছেন। সুমন্তকে জোর করেই কোন্ডা পরিবারের বিরুদ্ধে জবানবন্দী দিতে বাধ্য করেছে।

সুরেখা কন্যা সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার মা এবং বাবাকে টার্গেট করছে রাজ্য সরকার। আমার মা একজন মন্ত্রী, আর দেখুন তারা আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে। আমরা বুঝতে পারছি না আমরা কী ভুল করেছি। আমাদের খুনের চেষ্টা চলছে।' সুরেখা কন্যা সুস্মিতার আরও বড় অভিযোগ, যেখানে নানা বিষয় নিয়ে পথে নেমে গলা ফাটাচ্ছেন খোদ রাহুল গান্ধী, সেখানে একজন পিছিয়ে পড়া দলের নেত্রীকে হেনস্থা করছে দল।

আরও পড়ুন: রাজ্যের উন্নয়নে একগুচ্ছ পদক্ষেপ, নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার ...

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ওএসডি, সুমন্তকে গতকাল কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশ এখানে এসে বলছে যে সুমন্ত আমাদের বাড়িতে আছে, কিন্তু তাদের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই।' এবং গোটা ঘটনায় সরাসরি সুস্মিতার অভিযোগ, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্তের দিকে। তাঁর অভিযোগ, রেবন্ত সরাসরি এই বিরাট ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। তাঁর অঙ্গুলি হেলনেই এই কাজ হচ্ছে রাজ্যে। একজন মহিলা নেত্রীকে এবং একজন মন্ত্রীকে কোনও কারণ ছাড়াই নিশানা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, এই অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই এক প্রকার তোলপাড়। বিরোধীরা স্বাভাবিকভাবেই এই অভিযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে, চেষ্টা করছে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার।

শুধু এটুকুই নয়, সুস্মিতা, আরও দাবি করেন যে মুখ্যমন্ত্রীর আরেক সহযোগী রোহিন রেড্ডি ডেকান সিমেন্টসের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন এবং কেন তিনি এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপের মুখোমুখি হননি, অর্থাৎ কেন তাঁকে বরখাস্ত করা হয়নি, বা কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি? যদিও সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সুস্মিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোহিন রেড্ডির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সুমন্তের সঙ্গে কোনওরকমের যোগসূত্র অস্বীকার করেন।

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 16, 2025

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরেই তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায় বসেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছেন রেবন্ত রেড্ডি। তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের জয়ের পর থেকেই নিশ্চিত ছিল, সে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুরশিতে বসবেন অনুমুলা রেবন্ত রেড্ডি। ৭ ডিসেম্বর, হায়দরাবাদের এলবি স্টেডিয়ামে তেলেঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রেবন্ত রেড্ডি। শুধু তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আরও ১০ বিধায়ক। সেদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন গোটা গান্ধী পরিবারই। ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও। শপথগ্রহণের "ঐতিহাসিক মুহূর্ত"র সাক্ষী থাকতে স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় ভর্তি।  কিন্তু বছর ঘোরার পর থেকেই সে রাজ্যে নানা বিষয়ে হাত শিবিরের ভিতরের দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। এবার দলের নেত্রীর মেয়ে অভিযোগ করলেন, রেড্ডি নিশানা করছেন, ষড়যন্ত্র করছেন দলের নেত্রীদের বিরুদ্ধে।