নিতাই দে, আগরতলা: ত্রিপুরা সরকারের নয়া উদ্যোগ। সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে অন্ত্যোদয় পরিবারভুক্ত বিবাহযোগ্য কন্যাদের বিবাহের জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। গত ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার মহাকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এই তথ্য জানান। তিনি আরও বলেন, একই বৈঠকে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অন্ত্যোদয় শ্রদ্ধাঞ্জলি যোজনায় মৃত্যুবরণকারী অন্ত্যোদয় পরিবারের সদস্যদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন।
এছাড়া সমাজকল্যাণ দপ্তরের অধীনে চালু হচ্ছে ‘চিফ মিনিস্টার স্কিম ফর মেন্টালি চ্যালেঞ্জড পার্সনস’ নামের নতুন প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় শুধুমাত্র মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হবে। সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধীনে সিডিপিও–র চারটি শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া টিপিএসসি–র মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি এই দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী জানান,
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ত্রিপুরা বিধানসভা অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে। এর আগে অনুষ্ঠিত হবে বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটির (বিএসি) বৈঠক। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে অধিবেশন কতদিন চলবে এবং কোন কোন বিষয় বিধানসভায় আলোচনা হবে।
এদিকে, ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়কে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করতে এবং পর্যটনের সুবিধাকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে ১২৫.৬৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে৷
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে, সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণের একটি প্রশ্ন ছিল ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়কে পর্যটন খাতে বিশেষ করে জনজাতি ঐতিহ্য, ইকো–ট্যুরিজম এবং বন্যপ্রাণী পর্যটনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে উদ্যোগের মাধ্যমে সম্পৃক্ত করার জন্য সরকার কী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে৷ এছাড়া পর্যটনের সুবিধা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হোমস্টে, স্থানীয় গাইড পরিষেবা এবং হস্তশিল্প বিক্রয়ের প্রচারের জন্য গৃহীত/নেওয়া পদক্ষেপের বিশদ বিবরণ সম্পর্কেও জানতে চান তিনি৷ সরকার কীভাবে পর্যটনকে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে, যার ফলে ত্রিপুরার এই সম্প্রদায়ের জন্য টেকসই জীবিকা তৈরি হচ্ছে–সে সম্পর্কেও জানতে চান তিনি৷ এর উত্তরে পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জানান, পর্যটন কেন্দ্র এবং পর্যটন পণ্যের উন্নয়ন এবং প্রসার প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (ইউটি) প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত হয়। পর্যটন মন্ত্রক তার কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির মাধ্যমে এই প্রচেষ্টাগুলিকে পরিপূরক করে থাকে৷ এই প্রকল্পগুলির মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে–‘স্বদেশ দর্শন (এসডি)’, স্বদেশ দর্শন ২.০ (এসডি ২.০), স্বদেশ দর্শনের অধীনে ‘চ্যালেঞ্জ ভিত্তিক গন্তব্য উন্নয়ন (সিবিডিডি), ‘তীর্থযাত্রা পুনরুজ্জীবন এবং আধ্যাত্মিক, ঐতিহ্য বৃদ্ধি অভিযান (প্রসাদ)’, এবং ‘পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে সহায়তা’ (এসিএ) প্রকল্প। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, অর্থের প্রাপ্যতা, প্রকল্পের নির্দেশিকা মেনে চলা এবং রাজ্য সরকার/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন কর্তৃক বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) জমা দেওয়ার সাপেক্ষে এই প্রকল্পগুলির অধীনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে৷
