আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রাণীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার এক হৃদয়বিদারক কিন্তু অস্বাভাবিক ঘটনা সামনে এসেছে, যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পোষ্য মুরগির পা ভেঙে দিয়েছে প্রতিবেশী। কঠোর শাস্তি চেয়ে আহত পোষ্য মুরগিটিকে নিয়ে সটান থানায় হাজির হয়েছেন এক মহিলা। আবেগঘণ সেই ঘটনার মুহূর্ত ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার নালগোন্ডা জেলায়। গোল্লাগুডেম গ্রামের গঙ্গাম্মা নামে ওই মহিলা তাঁর পোষা মুরগিটিকে খুব ভালবাসেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর দাবি, তাঁর প্রতিবেশী রাকেশ নামে এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তাঁর পোষ্য পাখিটিকে অমানবিকভাবে আঘাত করেছিলেন। কেন এই আচমকা হানা? জানা গিয়েছে, মুরগিটি এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াত এবং রাকেশের খড়ের গাদায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শস্য খেয়ে নিত। নিজের ক্ষতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবেশী ব্যক্তি মুরগিটিকে আক্রমণ করে। যার ফলে প্রাণীটির পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। ফলস্বরূপ, মুরগিটি ঠিকমতো হাঁটতে পারছে না। থানায় গিয়ে বৃদ্ধা মহিলা যখন তাঁর পোষা মুরগিটিকে ধরে রেখে তার ভাঙা পায়ের ঘটনাটি বর্ণনা করেছিলেন, তখন সেই আবেগঘন মুহূর্তটি ক্যামেরায় কেউ ভিডিও করে নেন। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
పోలీస్ స్టేషన్లో కోడి పంచాయితీ
— Telugu Scribe (@TeluguScribe)
కోడిని కొట్టాడని పోలీసులకు ఫిర్యాదు చేసిన మహిళ
నల్గొండ జిల్లా నకిరేకల్ పట్టణంలోని గొల్లగూడెంలో తన గడ్డివాములో గింజలు తింటుందని, కర్రతో కొట్టి కోడి కాళ్లు విరగగొట్టిన రాకేష్ అనే వ్యక్తి
దీంతో పోలీసులకు ఫిర్యాదు చేసిన గంగమ్మ
పోలీసులు సర్దిచెప్పే… pic.twitter.com/I9MssgNZbhTweet by @TeluguScribe
হতাশ হয়ে গঙ্গাম্মা আহত মুরগিটি নিয়ে নাকেরকল থানায় যান এবং রাকেশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। বৃদ্ধা মহিলা দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে তিনি তাঁর পোষা প্রাণীর ক্ষতির জন্য কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণ চান না। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে তার একমাত্র দাবি হল তাঁর পোষা প্রাণীর উপর করা নিষ্ঠুরতার জন্য ন্যায়বিচার।
পুলিশ কর্মকর্তারা প্রথমে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও, তার পোষা প্রাণীর আঘাতের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও, গঙ্গাম্মা কঠোর শাস্তির দাবিতে অনড় ছিলেন। গঙ্গাম্মার জেদের কাছে হার মেনে পুলিশকর্তারা অবশেষে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজি হন। তাঁকে গ্রামে গিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বিরোধ সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। পুলিশের আশ্বাসের পরেই মহিলাটি তাঁর আহত মুরগি নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: নেপালকে ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে জইশ এবং লস্কর, ভারতকে হুঁশিয়ারি প্রতিবেশী দেশের
এই ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ার তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মহিলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাঁর সহানুভূতির জন্য তাঁর প্রশংসা করেছেন। এমনকি কেউ কেউ গ্রামীণ এলাকায়ও প্রাণী সুরক্ষা আইন আরও জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছেন।
একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী লিখেছেন, "গরু, কুকুর, বিড়াল, অথবা মোরগ যাই হোক না কেন, যন্ত্রণা একই। অপরাধ একই। আর তাই, আইন একই থাকে।" অন্য একজন লিখেছেন, “কেউ কেউ হাসতেই পারেন। কিন্তু এটি হাসির বিষয় নয়। এটি নিষ্ঠুরতা। আর এটি একটি অপরাধ।”
এই ঘটনাটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে দেশে প্রাণী সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয়তা কতটা। কিছুদিন আগে ছত্তীসগড়ের সুকমা জেলার এক গ্রামে একটি কালো ভাল্লুককে ভয়ঙ্করভাবে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, ভাল্লুকটির পা স্টিলের তার দিয়ে কাঠের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং এক ব্যক্তি তার কান টানছেন, অপর ব্যক্তি মাথায় আঘাত করছেন ও নখ তুলে নিচ্ছেন। ভাল্লুকটি যন্ত্রণায় ছটফট করছে, আর মুখ থেকে প্রচুর রক্তপাত হচ্ছে। এই ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।
