আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলায় রবিবার ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একটি পাথরখাদানের দেওয়াল ধসে পড়ে কমপক্ষে ১৫ জন শ্রমিকের আটকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে এক শ্রমিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোনভদ্রর বিল্লী মারকুন্ডি গ্রামের কৃষ্ণা মাইনস পাথরখাদানে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক সঞ্জীব কুমার গোঁড ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বি. এন. সিং জানান, খাদানটির ভেতরে হঠাৎই একটি শক্ত পাথরের দেয়াল ধসে পড়ে এবং শ্রমিকরা তার নিচে চাপা পড়ে যায়। তিনি বলেন, “খাদানের ভেতরে একটি বড়সড় দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। কয়েকজন শ্রমিক তার নিচে চাপা পড়েছেন। ঠিক কতজন আটকে পড়েছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকাজে তৎপরতা নিশ্চিত করতে মির্জাপুর থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF)-এর দল ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। দুর্গম ভূখণ্ড ও পাথরের বিশাল স্তূপের কারণে উদ্ধারকাজ জটিল হয়ে উঠেছে। ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর পাশাপাশি হাতে-কলমে অপারেশনও চালানো হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রমেশ চন্দ্র যাদব বলেন, “উদ্ধার অভিযান চলছে এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। যারা উদ্ধার কাজে যুক্ত আছেন, তারা শিগগিরই বিস্তারিত তথ্য জানাবেন।” তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আশা করা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে সাফল্য মিলবে।
মন্ত্রীর মন্তব্য অনুযায়ী, মাইনসটির পরিচালনা ও নিরাপত্তার মান নিয়ে তদন্ত শুরু করা হবে। সঞ্জীব কুমার গোঁড জানান, “এই খনি কী পরিস্থিতিতে পরিচালিত হচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে। যাদের অবহেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মৃত ও আহতদের পরিবারের পাশে আছি।” তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ভাতা এবং সহায়তা প্রদান করা হবে। “এটি অত্যন্ত দু:খজনক ঘটনা” ।
এদিকে, ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে কয়লা খনির এক পৃথক দুর্ঘটনার খবরও সামনে এসেছে। গত ২৭ অক্টোবর ধানবাদ জেলার পুটকি থানা এলাকার একটি ওপেন-কাস্ট কয়লা খনিতে দেওয়াল ধসে একটি অয়েল ট্যাঙ্কারের ওপর পড়ে এক বেসরকারি সংস্থার কর্মীর মৃত্যু হয় এবং আরও দুইজন আহত হন। খনি এলাকার একাংশ হঠাৎ ধসে পড়লে ট্যাঙ্কারটি উল্টে যায় এবং তার ওপরে প্রচুর পরিমাণ মাটি ও পাথর জমে যায়।
পুটকি থানার ওসি ওয়াকার হুসেন বলেন, “অয়েল ট্যাঙ্কারটি খনির ভেতরে যন্ত্রপাতিতে জ্বালানি ভরতে গিয়েছিল। ঠিক সেই সময়ে খনির পাশের দেয়াল ভেঙে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপ ট্যাঙ্কারের ওপর এসে পড়ে।” দ্রুত উদ্ধারকারী দল পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে পাঠায় এবং মৃত ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
সোনভদ্র ও ধানবাদের পৃথক এই দুটি দুর্ঘটনা আবারও খনি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা সামনে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিদর্শন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা মান বজায় না থাকলে এই ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
