আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিনে দুপুরে রুদ্ধশ্বাস ঘটনা পাঞ্জাবে। ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বিধায়ক পালিয়ে গেলেন পুলিশি হেফাজত থেকে। পালানোর সময় ছুঁড়লেন কয়েক রাউন্ড গুলি। এখানেই শেষ নেয় গাড়ি নিয়ে পালানোর সময় বাধা দিতে গেলে পিষে দেওয়া হল পুলিশকেও। একটি স্করপিও এবং ফরচুনার গাড়িতে করে পালিয়েছেন বিধায়ক এবং তাঁর সহযোগীরা। পুলিশ তাঁদের খোঁজ শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সকালে সানৌরের আপ বিধায়ক হরমিত পাঠানমাজরাকে ধর্ষণের অভিযোগে কার্ণাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় হরমিত এবং তাঁর সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। একজন পুলিশকর্মী তাঁদের থামানোর চেষ্টা করলে তারা ওই পুলিশের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন এবং দু’টি এসইউভিতে করে পালিয়ে যাম। পরে পুলিশ ফরচুনার গাড়িটি আটক করতে সক্ষম হয়। কিন্তু বিধায়ক অন্য গাড়িতে ছিলেন এবং এখনও পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি জারি রেখেছে। ফরচুনার থেকে কমপক্ষে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ভারতের রাশিয়া নয়, আমাদের সঙ্গে থাকা উচিত', উপদেষ্টার মুখ দিয়ে কি মনের কথা বলালেন ট্রাম্প!
হরমিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা এবং অপরাধমূলক ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। একজন মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়। এফআইআর-এ বলা হয়েছে, বিধায়ক ওই মহিলাকে মিথ্যা বলেছিলেন যে তিনি বিবাহবিচ্ছিন্ন এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। ওই মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন শোষণ, হুমকি এবং অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি পাঠানোর অভিযোগ করেছেন।
AAP MLA Harmeet Singh Pathanmajra booked in rape case ran away from police custody and also injured one police official while he was brought to police station.@PTI_News @AAPPunjab pic.twitter.com/dC63oqtPmi
— Neha Salaria Sharma (@SalariaNeha)Tweet by @SalariaNeha
এফআইআর অনুযায়ী, ৪৫ বছর বয়সী অভিযোগকারিনী বিবাহবিচ্ছিন্না এবং তাঁর একটি মেয়ে আছে যিনি বিদেশে থাকেন। ২০১৩ সালের দিকে হরমিত তাঁকে জানিয়েছিলেন যে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। এর পরেই তাঁর সঙ্গে হরমিতের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালে, দু’জনে লুধিয়ানার একটি গুরুদ্বারে বিয়ে করেন। কিন্তু ২০২২ সালে, যখন হরমিত সানৌর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তখন তিনি দেখতে পান যে হরমিত তাঁর হলফনামায় প্রথম স্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছেন। সেই নিয়ে অশান্তি শুরু হয় দু’জনের। ওই মহিলার অভিযোগ, বিধায়ক তাঁকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকেন এবং বারবার বলতে থাকেন যে তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে নেবেন।
গত কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে রয়েছেন হরমিত। পাঞ্জাবের বন্যা মোকাবিলায় দলের সরকারের সমালোচনা করেছিলেন এই বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের পর, তিনি ফেসবুকে লাইভে এসে পাঞ্জাবের ভগবন্ত মান সরকারের সমালোচনা আরও তীব্র করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে দিল্লির আপ নেতৃত্ব ‘অবৈধভাবে পাঞ্জাবের উপর শাসন করছে’ এবং দলের সহ-বিধায়কদের সমর্থন চেয়েছিলেন। লাইভে তিনি বলেন, “তারা আমার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে পারে, আমি জেলে থাকতে পারি, কিন্তু আমার কণ্ঠস্বর দমন করা যাবে না।”
বিধায়ক আরও দাবি করেছেন যে দলের সরকারের সমালোচনা করার পরে তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি গতকালই আমার রক্ষিদের বলেছিলাম যে তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে। দিল্লির নেতারা (আপের) মনে করেন যে তারা ভয় বা এফআইআর করে আমাকে ভয় দেখাতে পারেন, কিন্তু আমি কখনও মাথা নত করব না। আমি আমার জনগণের সঙ্গে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থাকব।” এর আগে, হরমিত বলেছিলেন যে রাজ্য সরকারের জনগণের কথা শোনা উচিত, নাহলে তারা ‘আমাদের মারবে’।
