আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভিন জাতের তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। তা শুরু থেকেই মানতে পারেনি তাঁর পরিবার। ছেলেকে বারবার বিয়ে ভাঙার জন্য জোর করছিলেন। ভিন জাতের নাতির মুখ না দেখার জন্য তাই গর্ভবতী পুত্রবধূকেই মেরে ফেললেন শ্বশুর। এই খুনে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন তরুণীর শাশুড়ি ও ননদ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে আসিফাবাদ জেলায়। শনিবার ২০ বছরের গর্ভবতী এক তরুণীকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন তাঁর শ্বশুর কুমুরাম ভীম। ভিন জাতের তরুণীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে ঘিরেই আপত্তি ছিল অভিযুক্ত শ্বশুরের।
দাহেগাঁও মণ্ডলে গেরে গ্রামে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, রানি নামের ওই তরুণী ন'মাসের গর্ভবতী ছিলেন। আগামী এক-দু'সপ্তাহের মধ্যেই সন্তান প্রসব করার কথা ছিল। ছেলে শেখরের সঙ্গে রানির বিয়ে মানতে পারেননি শ্বশুর। রানি তফসিলি উপজাতির ছিলেন। যা ঘিরে মূলত আপত্তি ছিল শ্বশুরের।
ঘটনার দিন রানি বাড়িতে একাই ছিলেন। সেই সময়ে ঘরে ঢুকে হামলা করেন অভিযুক্ত শ্বশুর। তুমুল বচসার পর ধারালো কুড়ুল ও ছুরি নিয়ে পুত্রবধূর উপর হামলা করেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রানির। এই বিয়ে ঘিরে রানির শাশুড়ি ও ননদ ক্ষুব্ধ ছিলেন। শেখরকে বারবার বিয়ে ভাঙার জন্য জোরাজুরি করতেন শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ। অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন।
কয়েক বছর ধরে রানি ও শেখরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক থাকাকালীন গর্ভবতী হয়ে পড়েন রানি। কয়েক মাস আগে রানিকে বিয়ে করেন শেখর। সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর এহেন পরিণতির পর বাবা, মা ও বোনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখর। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শ্বশুরকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে জোরকদমে। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে পণের দাবিতে আরও এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। পণের জন্য সদ্য বিবাহিত তরুণীর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বিহার। এবারেও পণ হিসেবে সোনার গয়নার দাবি করেছিল শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু খানিকটা সময় চেয়েছিলেন তরুণীর বাবা। অধৈর্য হয়ে তরুণীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল বিহারের খাগাড়িয়া জেলার বরখান্দি তোলা গ্রামে। জানা গেছে, তরুণীর সঙ্গে বিভীষণ যাদবের বিয়ে হয়েছিল এক বছর আগে। তরুণীর বাবা জাদো যাদব জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পণের জন্য হেনস্থা করতেন তরুণীকে। আরও সোনার গয়নার দাবি করতেন তাঁরা। এদিকে তরুণীর বাবা আশ্বাস দেন, আর দুই মাস পরেই তিনি সব দাবি পূরণ করবেন।
কাঁদতে কাঁদতেই জাদো যাদব জানান, 'আমি শুধুমাত্র দুই মাস সময় চেয়েছিলাম!' আরেক আত্মীয় জানান, সোনার গয়না না পেলে তরুণীকে খুনের হুমকিও দিয়েছিল তারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, আগে বিভীষণ চাষবাসের কাজ করতেন। কিন্তু গত মাস ধরেই বিহারেই গাঁজা ও বিষমদ বিক্রি করতেন। তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরপর তাঁর দেহটি ঝুলিয়ে দেন। তরুণীর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তরুণীর বাবা জানিয়েছিলেন, 'আমার যা সার্মথ্য ছিল, সবকিছুই দিয়েছিলাম। তাও সোনার হার আর গাড়ির দাবি করছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সদ্য ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলের বিয়ের সময় থেকেই সোনার হারের দাবিদাওয়া শুরু হয়। দুই মাস সময় চেয়েছিলাম। তার মধ্যেই মেয়েকে খুন করে দিল।' তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক।
