আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরপর একই ঘটনা। একই অভিযোগ। দিল্লিতে মেয়ের মৃত্যুতে পরিবার যে অভিযোগ তুলছে, তা যেন মিলে যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের পরপর ঘটে যাওয়া বেশকিছু ঘটনার সঙ্গে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার সকালে দিল্লির দ্বারকাতে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তথ্য, দিল্লির দ্বারকাতে ২২ বছরের যুবতীর মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে ওই যুবতীর বিয়ে হয়েছুইল মাত্র চার বছর আগে। জানা গিয়েছে, যুবতীর নাম কোমল আলিয়াশ বর্ষা। চারমাস আগে বিয়ে হয়েছিল কোমলের, তিনি দু' মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জানা গিয়েছে, ২১ আগস্ট কোমলের বাবার কাছে ফোন আসে, তাতে বলা হয়, মেয়ের শরীর অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে গেলে শোনেন, মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট জানা না গেলেও, কোমলের আবার অভিযোগ, মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই পনের জন্য চাপ দেওয়া হতো। লাগাতার শারীরিক অত্যাচার করা হতো। মহিলার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে যৌতুক নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ মহিলার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের বক্তব্যও রেকর্ড করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে, প্রায় একই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসে হায়দরাবাদে। হায়দরাবাদের শহরতলি বালাজি হিলসে এক ব্যক্তি নিজের পাঁচ মাসের গর্ভবতী স্ত্রীকে খুন করে দেহ খণ্ডবিখণ্ড করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার দেহের মাথা, হাত ও পা ইতিমধ্যেই মুসি নদীতে ফেলে দিয়েছিল অভিযুক্ত। বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে তরুণীর দেহের অংশ। জানা গিয়েছে, নিহতের নাম স্বাতী (২১)। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভিকারাবাদ জেলার কামারেড্ডিগুড়ির বাসিন্দা স্বাতী ও মহেন্দর একে অপরের প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন। পরে তারা চলে আসেন হায়দরাবাদের বালাজি হিলসে। মহেন্দর একটি ক্যাব পরিষেবা সংস্থার গাড়ি চালাতেন।
অভিযোগ উঠেছে, গত শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ স্ত্রীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় মহেন্দর। এরপর ফোনে বোনকে জানায়, তার স্ত্রী নিখোঁজ। বোন সন্দেহ করে এক আত্মীয়কে জানালে, আত্মীয় মহেন্দরকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে স্ত্রী নিখোঁজ দাবি করলেও, জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত খুনের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই মহেন্দরকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিসিপি (মালকাজগিরি জোন) পি ভি পদ্মজা জানিয়েছেন, ‘মৃতদেহের কেবল ধড় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ফরেন্সিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃতার পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্ট হবে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে’।
নিহত মহিলার বাবা জানান, জামাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে তাঁদের মধ্যে আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাঁর কথায়, ‘আমার মেয়ে বলত, সব ঠিকঠাক আছে। কিন্তু ওর উপর নিয়মিত নির্যাতন চলত। আমার মেয়েকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছে, ওকেও সেভাবেই কষ্ট পেতে হবে’। এই নৃশংস ঘটনায় স্তব্ধ হায়দরাবাদ, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি তুলছেন প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা। উল্লেখ্য, স্ত্রীকে খুন করার নৃশংস ঘটনা ঘটেছে গ্রেটার নয়ডাতেও। জানা গিয়েছে, পণ না দেওয়ায় দিনের পর দিন নির্মম শারীরিক নির্যাতন চলত ওই একই বাড়িতে বিয়ে হওয়া দুই বোনের ওপর।
দুজনেই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাও আবার নিজেদের সন্তানদের সামনেই। এর মধ্যে বিপিন তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারতে মারতেই গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, গায়ে আগুন নিয়ে প্রাণপণে চিৎকার করে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান নিক্কি নামে ওই তরুণী। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতি হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই শ্বশুরবাড়ির অকথ্য নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ওই তরুণীর দিদি। থানায় অভিযোগ দায়ের করে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কড়া শাস্তির দাবি জানান তিনি।
