আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটি অগ্নিকাণ্ড এবং সেখান থেকেই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধার হল দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাংলো থেকে। ওই নগদ অর্থের কোনও হিসেব দিতে পারেননি বিচারপতি বা তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। তাঁকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে এলাহাবাদে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে দোলের ছুটি চলাকালীন দিল্লিতে তাঁর সরকারি বাংলোয় আগুন লেগে যায়। সেই আগুন নেভানোর সময় দমকলকর্মীরা তাঁর বাড়ির ভিতর টাকার সন্ধান পান। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। সেই টাকার উৎস সম্পর্কে বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কেউই সেই বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। বিচারপতিকেও সেই টাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনিও সেই টাকার হিসেব দিতে ব্যর্থ হন।

বিচারপতির বাংলো থেকে টাকা উদ্ধারের বিষয়টি ভাল ভাবে দেখেনি সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম বিচারপতি বর্মাকে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের খবর, পাঁচ জন বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেখানেই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কোনও কোনও সদস্য আরও কঠোর ‘শাস্তি’র পক্ষে ছিলেন। তাঁদের মতে, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না-করা হলে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নড়ে যেতে পারে। তবে আপাতত বদলির সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, বিচারপতি বর্মাকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে আবার ইলাহাবাদ হাই কোর্টে ফিরে যেতে হবে।

কে এই বিচারপতি যশোবন্ত বর্মা?

১৯৬৯ সালের ৬ জানুয়ারি ইলাহাবাদে জন্ম তাঁর। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের  হংসরাজ কলেজ থেকে বি. কম স্নাতক। এরপর মধ্যপ্রদেশের রেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা। ১৯৯২ সালের ৮ আগস্ট থেকে তিনি ওকালতি শুরু করেন। ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর ইলাহাবাদ হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৬ সাল থেকে পদোন্নতির আগ পর্যন্ত তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিশেষ আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

২০১১ সালে তাঁকে দিল্লি হাই কোর্টে বদলি করা হয়। ইলাহাবাদ হাই কোর্টে তাঁর আইনি কর্মজীবনে, বিচারপতি বর্মা সাংবিধানিক আইন, শ্রম ও শিল্প আইন, কর্পোরেট আইন, কর এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের প্রধান আইনজীবীর পদে ছিলেন তিনি। তারপর আদালত কর্তৃক বরিষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে মনোনীত হন।