আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবারও ভয়ঙ্কর নারী নির্যাতনের ঘটনা ওড়িশায়। এবার নাবালিকাকে গণধর্ষণের চেষ্টা প্রেমিক ও তার বন্ধুদের। হেনস্থার মুখে পড়লেও পালিয়ে বাঁচতে পেরেছে সে। অপহরণ ও গণধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে পাঁচজনের বিরুদ্ধে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায়। পুলিশ আধিকারিক বনমালী বরিক জানিয়েছেন, এক নাবালিকাকে অপহরণ করার অভিযোগ রয়েছে তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। অপহরণের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল সে। সেখানে ওই অভিযুক্ত তরুণ ও তার চার বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করার চেষ্টা করে নাবালিকাকে।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ৪ আগস্ট। সেদিন টিউশনে যাচ্ছিল নাবালিকা। শিক্ষকের বাড়িতে যাওয়ার পথে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার টোপ দিয়ে নাবালিকাকে অপহরণ করে তার প্রেমিক। এরপর তরুণের সঙ্গে যোগ দেয় তার আরও চার বন্ধু। ঘুরতে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে নাবালিকাকে জঙ্গলে নিয়ে যায় তারা।
সেখানেই নাবালিকাকে গণধর্ষণের চেষ্টা করে বন্ধুরা মিলে। চিৎকার করে কোনও মতে পালিয়ে আসে নাবালিকা। এরপর বাড়িতে ফিরে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা পরিবারকে জানায় সে। সেদিনই উদালা থানায় নাবালিকার প্রেমিক ও তার চার বন্ধুর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। পাশাপাশি নাবালিকার বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে পাঁচজনেই পলাতক ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে নাবালিকার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। অভিযুক্ত আরও চারজন বর্তমানে পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
৭ আগস্ট পুলিশ জানিয়েছে, ওড়িশার আঙ্গুল জেলাতেই এক আদিবাসী তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। তিনজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দুই নাবালক সহ তিনজনকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত মাসেই ওড়িশার একাধিক কলেজ পড়ুয়া গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কেন্দ্রপাড়ার তৃতীয়বার এই ঘটনা ঘটেছে তৃতীয়বার। এক কলেজ ছাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। পরিবারের তরফে ওই ছাত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। মানসিক নির্যাতন ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। বারবার তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হত বলেও অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার।
এর আগে গত ১২ জুলাই ওড়িশার বালেশ্বরের ফকির মোহন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও এক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ফকির মোহন কলেজের বি.এড-এর ছাত্রী ছিলেন এক তরুণী। ওই কলেজের হেড অব দ্যা ডিপার্টমেন্ট সমীর কুমার সাহুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। পয়লা জুলাই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান তরুণী। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, সাতদিনের মধ্যে তদন্ত করে, উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু সাতদিন পার করেও কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি। বরং বিষয়টি নিয়ে কারও কোনও মাথা ব্যথা ছিল না। অবশেষে কলেজের মধ্যে প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তরুণী ও তাঁর বন্ধুরা।
কলেজের গেটের সামনে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। দলে ছিলেন তরুণীও। হঠাৎ সকলের মাঝখান থেকে উঠে সোজা কলেজের করিডোরে চলে যান। সেখানে গিয়েই গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তাঁর শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখেই ছুটে আসেন সহপাঠীরা। তাঁরাও আগুন নেভাতে তোড়জোড় শুরু করেন। কয়েক মিনিট পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দুই দিন পরেই তরুণীর মৃত্যু হয়।
এরপর গত ১৯ জুলাই ওড়িশার পুরী জেলার বালাঙ্গা থানার অন্তর্গত এলাকায় আরও একটি এমন ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ঘটনার দিন তিনজন বাইক আরোহী প্রথমে এক তরুণীকে অপহরণ করে। পরে তারা মেয়েটিকে ভরগবী নদীর তীরে নিয়ে যায়। বাইবর গ্রাম সংলগ্ন একটি নির্জন জায়গায় তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানেই তরুণীর গায়ে প্রথমে একটি দাহ্য পদার্থ ঢালে৷ এরপর তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা চেঁচামেচি শুনে তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে যান। তাঁরা দ্রুত আগুন নিভিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করেন। এরপর পিপিলির একটি স্থানীয় হাসপাতালে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় তরুণীকে। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে এইমস (AIIMS) ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার (২০ জুলাই) তাঁকে দিল্লির এইমসে এয়ারলিফ্ট করে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। গত সপ্তাহে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
