আজকাল ওয়েবডেস্ক: পড়াশোনার অজুহাতে প্রায়ই ফাঁকা ক্লাসে বসিয়ে রাখত শিক্ষক। এরপর ঘরের দরজা বন্ধ করেই চলত যৌন হেনস্থা। লাগাতার ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করত শিক্ষক। প্রথমে সব মুখে কুলুপ এঁটে সহ্য করে নিলেও, সম্প্রতি সাহস করে শিক্ষকের কীর্তির ভিডিও তোলেন ওই ছাত্রী। তারপর ছড়িয়ে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। শিক্ষকের কীর্তি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। কিন্তু শিক্ষকের ভিডিও তুলে কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন তরুণী? এবার সে বিষয়েই মুখ খুলেছেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মধুবনী জেলায়। ওই জেলার জয়নগর এলাকার ঘটনা এটি। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, কোচিং সেন্টারের মধ্যে এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করছেন এক শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ধৃত শিক্ষক রাকেশ যাদবের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে। জয়নগর এলাকার বেলওয়া চক গলির গণিত কোচিং সেন্টারে ঘটনাটি ঘটেছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে রাকেশ ছাড়াও বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিং, সোনু চৌধুরী এবং যে যুবক ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ওই কোচিং সেন্টারের মধ্যে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির পরেও ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রীর বয়ান অনুযায়ী, শিক্ষকের শ্লীলতাহানির ভিডিওটি তিনিই শুট করেছিলেন। তাও আবার বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিংয়ের জোর করার কারণে। শিক্ষকের কীর্তির ভিডিও তোলার জন্য আগে থেকেই হুমকি দিয়েছিল কুলদীপ সিং। এমনকী ২০ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছিল সে। ছাত্রী জানিয়েছেন, সেই হুমকির জেরেই মোবাইল ফোনে ভিডিওটি তুলেছিলেন তিনি। এমনকী ওই কোচিং সেন্টারে এলেই কুলদীপ সিং অশালীন আচরণ করত। কখনও কখনও শরীরে অশ্লীলভাবে ছুঁয়ে চলে যেত।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক বছর আগেও এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল রাকেশের বিরুদ্ধে। সেই সময়েও রাকেশের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছিলেন ওই ছাত্রী। যার জেরে বেশ কিছু কয়েক জেল হেফাজতে ছিল সে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও একই ঘটনার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে। এবার সাহস করে শিক্ষকের ভিডিওটি মোবাইল ফোন বন্দি করেন এই ছাত্রী।
ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়রাও বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। রাকেশের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পুলিশকে। পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাকেশ পলাতক। তার খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনা অতীতেও একাধিক রাজ্যে ঘটেছে। গত মাসেই মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে এক ৩৫ বছর বয়সি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে খুদে ছাত্রকে যৌন হেনস্থার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘিরে খুদে ছাত্রের পরিবার পুলিশকে অভিযোগ জানায়। জানা গেছে, ভিডিও কল করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতেন ওই শিক্ষিকা। একাধিকবার কুপ্রস্তাব দিয়েছিল নাবালক ছাত্রকে। যা পরবর্তীতে পরিবারকে জানায় ওই ছাত্র। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
