আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যরাত পর্যন্ত পালন করেছিলেন ২৬তম বিবাহবার্ষিকী। আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতে চলেছিল নাচাগানাও। বিয়ের পোশাকেই সেজেছিলেন দম্পতি। কিন্তু তারপরেই সব শেষ। চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন ওই যুগল। মঙ্গলবার বাড়ি থেকেই উদ্ধার হল দম্পতির নিথর দেহ। ঘটনার শোকস্তব্ধ প্রতিবেশীরা। কী কারণে দু'জনে এই চরম পদক্ষেপ নিলেন তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশও।

ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের মার্টিননগর কলোনিতে। মৃত ব্যক্তির নাম জেরিল ড্যামসন অস্কার মনক্রিফ। বয়স ৫৭ বছর। তাঁর স্ত্রীর নাম অ্যানি। বয়স ৪৭ বছর। জেরিলের দেহ বাড়ির রান্নাঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অন্য ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় অ্যানির দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, জেরিল প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে মরতে সাহায্য করেন। এরপর অ্যানির দেহ বিছানায় রেখে চার মুড়িয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেন। তারপর রান্নাঘরে গিয়ে নিজেকে শেষ করে দেন। অ্যানির পরণে ছিল ২৬ বছর আগের বিয়ের পোশাক। পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিঃসন্তান ছিলেন জেরিল এবং অ্যানি। চরম পদক্ষেপের আগে সমাজমাধ্যমে বিশেষ বার্তা লিখেছিলেন। পোস্ট করেছিলেন সুইসাইড নোট এবং স্ট্যাম্প পেপারে লেখা একটি উইল। সুইসাইড নোটে তাঁরা কাউকে দায়ী করেননি। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি নামী রেস্তোঁরাতে প্রধান রাধুনির কাজ করতেন জেরিল। লকডাউনের পর সেই কাজ ছেড়ে দেন। বর্তমানে সুদে টাকা খাটাতেন তিনি। স্ত্রী অ্যানি গৃহবধূ ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৬টায় অ্যানির সমাজমাধ্যমের পোস্টটি দেখতে পান এক প্রতিবেশী। তিনি খবর দেন অ্যানির মা-কে। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ জেরিলের বাড়িতে পৌঁছন অ্যানির কয়েকজন আত্মীয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। মেয়ো হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দু'জনের মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেরিল এবং অ্যানির ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর পর দু'জনকে যেন একসঙ্গে কবর দেওয়া হয়। তাঁদের ইচ্ছেমতো একই কফিনে ভরে জারিপাটকা কবরখানায় তাঁদের সমাধি দেওয়া হয়। পুলিশের তরফ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেরিল এবং অ্যানির মোবাইল দু'টি ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।