আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে পরিকল্পনা করে খুন। নিজে নিখোঁজ থাকার পরিকল্পনা। প্রেমিকের সঙ্গে মিলে জটিল প্ল্যান। একে একে সোনম-রাজ-রাজা ত্রিকোণ প্রেমের কাহিনির পরিণতি প্রকাশ্যে আসতে শিউরে উঠেছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই ঘটনায় এবার নয়া মোড়! সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সোনমের দাদা গোবিন্দ রঘুবংশী সোনমের শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ রাজার বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন আংটি, চুড়ি, হার-সহ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার গয়না। জানা গিয়েছে, ওই বিপুল গয়না সোনমকে বিয়ের সময় রাজার পরিবার দিয়েছিল।

রাজাকে পরিকল্পনা করে খুনের অভিযোগে সোনম এখন জেলবন্দী। এই পরিস্থিতিতে তার দাদা গোবিন্দ, রাজার পরিবারকে ওই গয়না ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তথ্য, স্বামীর সঙ্গে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার আগে সোনম বিয়েতে পাওয়া সব গয়না তার বাপের বাড়িতেই রেখে গিয়েছিল। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল কেবল মঙ্গলসূত্র এবং একটি আংটি। যে দুটি এখন শিলং পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে রেখেছে। 

যদিও গয়না ফেরত দেওয়ার জন্য সোনমের দাদা সরাসরি রাজার বাড়িতে যাননি। জানা গিয়েছে, তিনি রাজেন্দ্র নগর থানার মাধ্যমে সব গয়না ফিরিয়ে দিয়েছেন। সাফ জানিয়েছেন, যেহেতু ওই সব গয়না তাঁর বোন বিয়েতে উপয়ার হিসেবে পেয়েছিল রাজার পরিবারের তরফ থেকে, তাই ওই গয়নায় কোনও অধিকার নেই তাঁদের। একই সঙ্গে সোনমের পরিবার জানিয়েছে, তারা বিয়েতে রাজাকে যে উপহার, গয়না, টাকা পয়সা দিয়েছিল, তা তারা ফেরত চায় না। সোনমের বাবা জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁরা বাড়ির মেয়ের বিয়েতে কন্যাদান স্বরূপ ওই টাকা-উপহার দিয়েছিলেন। তাই সেসব আর ফেরত চান না তাঁরা। 

 ১১ মে রাজা ও সোনাম গাঁটছড়া বাঁধেন।‌ এরপর মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে যান। ২৩ মে থেকে নবদম্পতির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২ জুন পাহাড়ি গভীর খাদ থেকে রাজার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তখনই তারা জানায়, পরিকল্পনামাফিক যুবককে খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি নিখোঁজ স্ত্রীয়ের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায় তারা। পরিবারের আশঙ্কা ছিল, সোনমকে সম্ভবত অপহরণ করা হয়েছে। ধর্ষণ করে, খুন করে মাটিতেও পুঁতে দিতে পারে। 

আরও পড়ুন: মাঠে কাজ করছিলেন, ভোটমুখী বিহারে পরপর গুলি ঝাঁঝরা করে দিল বিজেপি নেতাকে...

তবে আশঙ্কার মাঝেই গাজিপুর থেকে খঁজ মেলে সোনমের। তারপর থেকেই একে একে উন্মোচন হয় গোটা ঘটনা। জানা যায়, বিয়ের আগে থেকেই সোনম প্রেমের সম্পর্কে ছিল রাজ নামের এক যুবকের সঙ্গে। সোনমের বিয়ের ঠিক পাঁচদিন পর রাজ তাঁর ছোটবেলার তিন বন্ধু আনন্দ, আকাশ ও বিশালকে একটি ক্যাফেতে ডাকেন। রাজাকে খুনের পরিকল্পনা জানান। এমনকী বিপুল অর্থের লোভ দেখিয়েছিলেন তাঁদের। 

২০ মে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশে রওনা হন রাজা ও সোনম। হাতে ছিল শুধুমাত্র যাওয়ার টিকিট। ফেরাটা ছিল অনিশ্চিত। তাঁদের পিছু নিয়েছিলেন বাকি তিনজন। গুয়াহাটি পৌঁছেই শিলংয়ে চলে যান তিন ভাড়াটে খুনি। সোনম ও রাজার হোমস্টের পাশেই একটি হোটেলে ছিলেন তাঁরা। 

শিলং পৌঁছে তিনদিন পাহাড়ি এলাকায় ঘুরে বেড়ান সোনম ও রাজা। ২৩ মে একটি নির্জন এলাকায় ফটোশুটের ছুতোয় রাজাকে নিয়ে গিয়েছিলেন সোনম। সেই জায়গায় পৌঁছন আনন্দ, আকাশ ও বিশাল। এমনকী রাজার সঙ্গে হিন্দিতে কথাও বলেন তাঁরা।  

সূত্রের খবর, সেই এলাকায় পৌঁছে সোনম জানান, তিনি ক্লান্তি বোধ করছেন। ক্লান্ত হওয়ায় রাজার পিছনে পিছনে পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটছিলেন। আরও খানিকটা হাঁটার পর আরও শুনশান একটি জায়গায় পৌঁছে যান পাঁচজনে। সেখানেই রাজাকে খুন করার জন্য চিৎকার করে তিনজনকে ডাকেন। মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড।‌