আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মীরাটে এক অদ্ভুত দাম্পত্য বিরোধ ঘিরে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। অভিযোগ, দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই গোঁফ-দাড়ি নিয়ে মতবিরোধ এমন জায়গায় পৌঁছয় যে বিবাহ মাত্র সাত মাসের মাথায় ভেঙে যায়। মহম্মদ সাগির নামে এক যুবক দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী আরশি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন শুধু এই কারণে যে তিনি দাড়ি কাটতে অস্বীকার করেছিলেন। সাগিরের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী একজন পরিষ্কার মুখের পুরুষ পছন্দ করতেন এবং সেই কারণে তিনি তাঁর ছোট ভাই সাবিরের প্রেমে পড়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। সাগির জানান, বিয়ের পর থেকেই আরশি তাঁর দাড়ি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করতেন এবং বারবার শেভ করে ফেলতে বলতেন, কিন্তু সাগির তাঁর দাড়ি রাখতে ভালোবাসতেন এবং তাতে পরিবর্তন আনতে রাজি ছিলেন না। প্রথমে বিষয়টি সাধারণ রুচির মতভেদ হিসেবেই শুরু হয়েছিল, কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই তা নিত্যদিনের ঝগড়ার কারণ হয়ে ওঠে।
এদিকে সাগিরের অভিযোগ, এই সময়ের মধ্যেই আরশি তাঁর ভাই-শালার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান এবং ফেব্রুয়ারি মাসে সুযোগ পেয়ে সাবিরের সঙ্গে পালিয়ে যান। স্ত্রীর খোঁজ না পেয়ে এবং তিন মাসেও কোনও খবর না মেলায় সাগির অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর কাছে আরশি এবং সাবিরের কথোপকথনের রেকর্ডিং রয়েছে, যেখানে তাঁরা পরিকল্পনা করছেন কী ভাবে সাগিরকে বিষ খাইয়ে বা ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে হত্যা করে তাদের সম্পর্ককে বিয়েতে পরিণত করা যায়।
এদিকে বুধবার ঘটনায় নতুন মোড় আসে, যখন আরশি তাঁর প্রেমিক সাবিরকে নিয়ে বাবা-মায়ের বাড়িতে উপস্থিত হন এবং স্পষ্ট জানান, তিনি আর সাগিরের সঙ্গে থাকতে চান না। তিনি সাগিরের দাড়ি সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, আসল সমস্যা ছিল তাঁর স্বামীর যৌন অক্ষমতা এবং সে কারণে তিনি বৈবাহিক জীবন চালিয়ে যেতে চান না। এই অপমানজনক বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে সাগির পুলিশের উপস্থিতিতে আরশিকে তালাক দিয়ে দেন।
এদিকে আরশিও দাবি তোলেন যে, বিয়ের সময় তিনি যে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে এনেছিলেন, তা সাগির ফেরত না দিলে তিনি তালাক চান না। তাঁর বক্তব্য, যদি অন্তত দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যায় তবে তিনি স্বামীকে ছেড়ে সাবিরের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করবেন, নইলে তিনি তালাক মানবেন না এবং একই বাড়িতে সাবিরের সঙ্গেই থাকতে চান।
পুরো ঘটনাটি সামনে আসতেই এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনার ঝড় উঠেছে। আইনগতভাবে এখন পরিস্থিতি কোন পথে যায়, তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত।
