আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'শোলে' রিলিজ করেছিল ১৯৭৫ সালে। মাঝে কেটে গেছে ৫০ বছর। সিনেমার এক আইকনিক দৃশ্য এবার বাস্তবেই দেখা গেল। 'বাসন্তী'র প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে জলের ট্যাঙ্কে উঠে গিয়েছিল 'বীরু'। 'বাসন্তী'র সঙ্গে বিয়ে না হলে, মত্ত অবস্থায় নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছিল। 'বীরু'র কাণ্ড দেখে এক জায়গায় জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। সকলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁকে বুঝিয়ে নীচে নামানোর চেষ্টা করছিলেন। সেই জায়গায় পৌঁছে যায় 'বাসন্তী'ও। বিয়ের প্রস্তাবে 'হ্যাঁ' শুনে, অবশেষে নীচে নামার চেষ্টা করে 'বীরু'।
সিনেমার সেই আইকনিক দৃশ্যে প্রভাবিত হয়ে এবার উত্তরপ্রদেশের এক যুবক মোবাইল টাওয়ারে উঠে, ঠিক একইভাবে বিয়ের জন্য হুমকি দিতে শুরু করেন। যে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের পাশাপাশি হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকেও। তবে বাস্তবের ঘটনায় অন্য মোড়। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হওয়া তো দূরের কথা, এখানে যুবককে দেখতেও আসলেন না তাঁর প্রেমিকা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ভাদোহী জেলায়। রবিবার ওই জেলাতেই এক মোবাইল টাওয়ারে উঠে বিয়ের জন্য কাকুতিমিনতি শুরু করেন এক যুবক। বিয়ে না হলে, তিনি ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলেও জানান। পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এই নাটকীয় মুহূর্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যুবকের নাম, পবন পান্ডে। টানা পাঁচ ঘণ্টা এমন পরিস্থিতি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ, দমকল মিলে উদ্ধার করার চেষ্টা করে। অবশেষে পুলিশের বুদ্ধিতেই নীচে নামতে বাধ্য হন পবন। পুলিশ আধিকারিক অশোক কুমার মিশ্র জানিয়েছেন, পবনের একটা ছোট্ট পানের দোকান আছে। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ ইয়াকুবপুরের কাছে একটি মোবাইল টাওয়ারে তিনি উঠে যান। উঁচু থেকেই খুশবু নামের এক মহিলাকে ডাকাডাকি করেন। খুশবকে বিয়ে করতে চান বলেও বারবার জানান। খুশবু ওই জায়গায় না এলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেন।
জানা গেছে, দমকল কর্মীরা ও পুলিশ বারবার বোঝানো সত্ত্বেও নীচে নামতে রাজি হননি পবন। এদিকে খুশবু নামের কোনও তরুণীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর এক মহিলা পুলিশ কর্মীকে খুশবু সাজিয়ে যুবকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। খুশবুর গলার স্বর শুনে দুপুর ২টো নাগাদ মোবাইল টাওয়ার থেকে নীচে নেমে আসেন যুবক।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পবন আসলে প্রতারণার শিকার। গত দুই বছর ধরে ইনস্টাগ্রামে এক মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আদতে সেটি ছিল একটি ভুয়ো প্রোফাইল। সেই প্রোফাইলে একটি মেয়ের ছবি ছিল। তার প্রেমেই হাবুডুবু খেতেন পবন। মেয়েটি নিজেকে খুশবু নামে পরিচয় দিয়েছিল। বিয়ের টোপ দিয়ে পবনের থেকে একাধিকবার টাকা হাতিয়েছে এই মেয়েটি।
পবনের ধারণা ছিল, খুশবুও তাঁকে ভালবাসে। কিন্তু অনেকেরই এই বিয়েতে মত নেই। তাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারছেন না তাঁরা। কিন্তু অবশেষে জানা গেলে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। এদিকে পবনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ভুয়ো প্রোফাইলের পিছনে কে বা কারা জড়িত তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রয়েছে।
