আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামনেই বিয়ে। বাড়িতেই চলছিল প্রস্তুতি। ঘরেই ছিলেন পাত্রী। আচমকাই তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের চারজন যুবক। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর উপর হামলা। পাত্রীর মুখে পেট্রোল ছুড়েই পালিয়ে গেল তারা! এর জেরেই বিয়ের দিন কয়েক আগে পাত্রীর চরম পরিণতি। তাঁর দু'টি চোখ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

 

জানা গেছে, বাড়িতেই ছিলেন পাত্রী। সেদিন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ঘরেই ছিলেন। পাত্রী ঘরে একা ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ চারজন যুবক তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে। পাত্রী চিৎকার করার আগেই তাঁর মুখে পেট্রোল ছুড়েই পালিয়ে যায় তারা। এদিকে পাত্রীর চিৎকার, চেঁচামেচি শুনেই ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। ততক্ষণে দুষ্কৃতীরাও বাড়ির সদর দরজা দিয়ে গায়েব হয়ে যায়। 

 

ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ঝাড়খণ্ডে। ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

 

আরও পড়ুন: মায়ের হাতের রান্নাতেই মৃত্যুফাঁদ! ভাত-ডাল খেয়ে পরপর তিন বোনের চরম পরিণতি, আঁতকে উঠল পুলিশও

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর অদূরে কাঁকে পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত টেন্ডারতোলা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার দুপুর একটা নাগাদ পাত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের চারজন যুবক। তখন বাড়িতে ভিড়ভাট্টা ছিল। চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি। ভিড়ের মধ্যে চারজন যুবককে কেউ আর খেয়াল করেননি। সেই সুযোগে হঠাৎ তাঁরা ঢুকে পড়ে পাত্রীর ঘরে। 

 

ঘরে ঢুকেই পাত্রীর মুখে পেট্রোল ছুড়ে মারে। চিৎকার করে ওঠেন তরুণী। তাঁর চিৎকারের শব্দ পেয়েই ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা।‌ তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কাশ্যপ মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যাসিড ছোড়া হয়নি। পেট্রোল ছুড়ে মারা হয়েছে তরুণীর মুখে। তাঁর দু'টি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি চোখের কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে‌। চোখে আপাতত কিছুদিন ঝাপসা দেখবেন। চোখ দুটি ঠিক হতেও সময় লাগবে। তাঁর মুখেও আঘাত লেগেছে। 

 

এও জানা গেছে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই তরুণী ছাড়া পান। বর্তমানে বাড়িতেই রয়েছেন। তবে তাঁর চোখে এখনও সমস্যা রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তরুণীর পরিবার। কারা এই ঘটনায় জড়িত, কী উদ্দেশ্যে তরুণীর উপর হামলা চালানো হল, তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তদের কোনও পুরনো সম্পর্ক ছিল কিনা, পুরনো ক্ষোভ বা রাগ ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করা হয়েছে। চারজন যুবকের খোঁজে জোরকদমে চলছে তল্লাশি অভিযান। 

 

এদিকে ঘটনাটি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। রাঁচী পুলিশকে 

দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তরুণীর চিকিৎসার সমস্ত ভার বহন করার ঘোষণা করেছেন।‌ তদন্তের গতিবিধি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।‌ এই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরফান আনসারিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, 'অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হননি তরুণী। পেট্রোল ছোড়া হয়েছিল। বর্তমানে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে জোরকদমে।'