আজকাল ওয়েবডেস্ক: তাঁকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! সপ্তাহ খানেক পেরিয়েও গেল। গ্রামে গ্রামে রটে গেল তাঁর নিখোঁজের খবর। বাড়ি বাড়ি পড়ল পোস্টার। এদিকে দিন কয়েক পরেই নিজের নিখোঁজ পোস্টার নিয়ে থানায় হাজির হলেন সেই যুবক। যা দেখে পুলিশ খানিকটা স্বস্তি বোধ করলেও, যুবকের কথা শুনে তাঁরা রীতিমতো হতবাক হয়ে যান।
থানায় নিজের নিখোঁজ পোস্টার জমা দেন ওই যুবক। পুলিশকে সঙ্গে এও জানান, তিনি নিখোঁজ ছিলেন না! তিনি আদতে বাড়িতেই ছিলেন। এমনকী পরিবারের কেউই তাঁর নিখোঁজ পোস্টার ছড়িয়ে দেননি গ্রামে। এই কাণ্ডের পিছনে রয়েছে একদল তরুণ। তাঁকে দিনের পর দিন হেনস্থা করছে তারা। হেনস্থা করার জন্যেই গ্রামে গ্রামে তাঁর নিখোঁজ পোস্টার ছড়িয়ে দিয়েছে ওই তরুণের দল।
যুবকের আরও অভিযোগ, কী কারণে তাঁকে হেনস্থা করা হয়, তার স্পষ্ট কারণ তিনি জানান না। সম্প্রতি এই ঘটনার জেরে তাঁর স্ত্রী তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপরই আরও অত্যাচার শুরু হয়। হেনস্থার থেকে রেহাই পেতে রীতিমতো ঘরবন্দি ছিলেন তিনি। সেই সুযোগে গ্রামূ ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর নিখোঁজ পোস্টার।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ছত্রা জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মহম্মদ ইরশাদ নামের ওই যুবক আদতে গেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা। দিন কয়েক আগে হান্টারগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই ছিল যুবকের নিখোঁজ পোস্টার। নিখোঁজ পোস্টার হাতে থানায় পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পুলিশকে ইরশাদ জানিয়েছেন, গত দুই মাস ধরে একদল তরুণ তাঁকে হেনস্থা করছে। দলটিতে কমপক্ষে ১২ জন তরুণ রয়েছে। কোনও কারণ ছাড়াই নিত্যদিন তাঁকে হেনস্থা করে। রাস্তায় বেরোলেই কটুক্তি করে। জনসমক্ষে বিদ্রুপ, উপহাস করে তাঁকে ঘিরে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন। তরুণদের মধ্যে কাউকেই কখনও বিরক্ত করেননি। অথচ নিত্যদিন তাঁদের দ্বারা হেনস্থার শিকার হন তিনি।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়েই হতবাক হয়ে তিনি। দেখেন, তাঁর গ্রামের সব বাড়ি, দোকান ও অফিসে তাঁর ছবি দেওয়া নিখোঁজ পোস্টার লাগানো রয়েছে। সেই পোস্টারে লেখা, গত ৫ জুলাই থেকে মহম্মদ ইরশাদ নিখোঁজ। তাঁকে খুঁজে দিতে পারলেই মিলবে পুরস্কার। যুবক জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের কেউ এই নিখোঁজ পোস্টারটি ছড়াননি। ওই তরুণের দল আবারও হেনস্থা করার অভিপ্রায়ে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
যুবক আরও জানিয়েছেন, জুলাই মাসের শুরুতে তাঁর স্ত্রী ওই দলের কয়েকজন তরুণকে বকাঝকা করেছিলেন। তিনি বারবার বিনা কারণেই উত্যক্ত করে, তা ঘিরে বকুনি দিয়েছিলেন। এরপর আরও বাড়াবাড়ি শুরু হয়। যুবকের অভিযোগ অনুযায়ী, মহম্মদ আদিল, মহম্মদ ছোটু, মহম্মদ আজাদ এবং মহম্মদ সইফ নামের তরুণের হেনস্থায় তাঁর জীবন রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েই নিজেকে ঘরবন্দি রেখেছিলেন কয়েক দিন। শুধুমাত্র নামাজ পড়ার জন্য ঘরের বাইরে বেরোতেন। এই তরুণদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
