আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০০২ সালে পৃথক রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ঝাড়খণ্ড। ২৪ বছরে ১৪ বার মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে। তিনবার জারি হয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসন। গেরুয়া শিবির বারবার আদিবাসী অধ্যুষিত এই রাজ্য নিয়ে নানা পরিকল্পনা করলেও, ২৪-এর বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খন্ড বুঝিয়ে দিল, হিমন্ত রণকৌশল বানালেও, আস্থা হেমন্তেই। শুধু তাই নয়, হেমন্ত সোরেন সে রাজ্যের প্রথম বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী, তিনি পুনরায় ভোট জিতে ফিরছেন মসনদে।

 ৮১ বিধানসভার রাজ্য। তুলনামূলক ছোট রাজ্য হলেও, গত কয়েকমাসে সে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল যে হারে ঘটেছে, তাতে ঝাড়খণ্ডের হাওয়া কোনদিকে বইছে, সেদিকে নজর ছিল সকলের। প্রথম দফায় ভোট হয়েছে ৪৩ আসনে, প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল প্রথম দফার ভোটের দিন। দ্বিতীয় দফায় ৩৮ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়েছে ঝাড়খণ্ডে। 

কেন ঝাড়খণ্ড নিয়ে এত চর্চা? তার কয়েকটি কারণ থাকলে অন্যতম হেমন্ত সোরেন। দুই, হেমন্ত সোরেন জেলে থাকার পরেও লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির ফলাফল, তিন চম্পাই সোরেন।  হেমন্ত সোরেন লোকসভা ভোটের আগের সময়টা কাটিয়েছেন জেলে। ৩১ জানুয়ারি, জমি কেলেঙ্কারি মামলায় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তারি ঠিক আগে হেমন্ত শর্ত দিয়েছিলেন, তাঁকে সুযোগ দিতে হবে রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দেওয়ার। হেমন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরতেই, সেই জায়গায় বসানো হয় চম্পাইকে। সেভাবেই চলল লোকসভা ভোট পর্ব। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে জেএমএম-এর হয়ে সামনে এগিয়ে এলেন হেমন্তের স্ত্রী কল্পনা। কিন্তু হেমন্ত ছাড়া পেতেই, সরতে হয়েছিল চম্পাই সোরেনকে। হেমন্ত মুখ্যমন্ত্রী হতেই, চম্পাই আর ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চায় থাকেননি। বিধানসভা ভোটের আগে তা বড় ধাক্কা ছিল জেএমএম-এর জন্য। তবে লোকসভা ভোটের পর, বিজেপি বড় বাজি রেখেছে ঝাড়খণ্ডে। লাগাতার হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শিবরাজ সিং চৌহান গিয়েছেন সেখানে। ভোট পর্ব শেষে অনেকেই বলেছিলেন, ঝাড়খণ্ডে জিততে পারে বিজেপি চালিত এনডিএ জোট। আবার কেউ কেউ বলেছিলেন পরিবর্তন নয়, প্রত্যাবর্তনেই ভরসা রাখছে ঝাড়খণ্ড। তবে ভোট শেষে দেখা গেল, হেমন্তের গ্রেপ্তারিই যেন শাএ বর হল তাঁর দলের জন্য। এই ভোটে হেমন্ত এবং তাঁর স্ত্রী দু’ জনেই জয়লাভ করেছেন। 

ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল, ঝাড়খণ্ড আস্থা রেখেছে হেমন্ত সোরেনের উপরেই। ৮১ আসনের রাজ্যে হেমন্ত সোরেনের জেএমএম এগিয়ে ৩৫, কংগ্রেস  ১৬ আসনে, আরজেডির ঝুলিতে ৪ আসন, সিপিআইএমএল এর থাকছে ২টি আসন। ইন্ডিয়া জোট মোট পাচ্ছে ৫৭ আসন। সেখানে বিজেপি চালিত এনডিএ জোট পেতে চলেছে ২৩টি আসন।৪১ ম্যাজিক ফিগার, সেখানে ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে অনেকটাই।