আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া দাবি করেছিলেন, রাজ্যে হৃদরোগের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে কোভিড ভ্যাকসিন দায়ী হতে পারে। এরপরেই বুধবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা জানিয়েছেন, তরুণদের মধ্যে কোভিড-১৯ টিকা এবং হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) এবং AIIMS দ্বারা পরিচালিত বিস্তৃত গবেষণায় চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে কোভিড-১৯-এর পরে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন এবং আকস্মিক অকাল মৃত্যুর মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই। গবেষণায় ভারতীয়দের জীবনধারা এবং পূর্ববর্তী কোনও স্বাস্থ্য অবস্থাকে মৃত্যুর মূল কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইসিএমআর এবং জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (এনসিডিসি) আকস্মিক মৃত্যুর কারণগুলি বোঝার জন্য একসঙ্গে কাজ করেছে। ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ভারতীয়রা কেন হঠাৎ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তা খতিয়ে দেখাই লক্ষ্য ছিল। এই গবেষণাটি ২০২৩ সালের মে মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত ১৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালে করা হয়েছিল।
এই গবেষণাটি এমন ব্যক্তিদের উপর করা হয়েছিল যারা নিজেরে সুস্থ বলে মনে করেছিলেন কিন্তু অক্টোবর ২০২১ থেকে মার্চ ২০২৩-এর মধ্যে হঠাৎ মারা গিয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, কোভিড-১৯ টিকা তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে না। গবেষণায় বলা হয়েছে, "হঠাৎ হৃদরোগে মৃত্যু বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে জেনেটিক্স, জীবনধারা, পূর্বের কোনও স্বাস্থ্য অবস্থা এবং কোভিড-পরবর্তী জটিলতা।"
সারা দেশে চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছরে ৪০ এবং ৫০ বছর বয়সের মধ্যে বেশ কয়েকজন সেলিব্রিটি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। গত সপ্তাহে মুম্বইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আচমকা প্রয়াত হয়েছেন ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি জরিওয়ালা। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা জানান কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এর আগে অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা (৪০), গায়ক কেকে (৫৩), অভিনেতা পুনীত রাজকুমার (৪৬), চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ কৌশল (৫০) এবং কৌতুক অভিনেতা রাজু শ্রীবাস্তব (৫৮) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।
গত মঙ্গলবার সিদ্দারামাইয়া রাজ্যে তরুণদের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পিছনে কোভিড-১৯ টিকার তাড়াহুড়ো অনুমোদন এবং বিতরণের কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন। সিদ্দারামাইয়া প্রতিবেদন তুলে ধরেছিলেন যেখানে বলা হয়েছিল, গত মাসে শুধুমাত্র কর্নাটকের হাসান জেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ২০ জন মারা গেছেন। তিনি কোভিড-১৯ টিকার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি অধ্যয়নের জন্য একটি প্যানেল গঠনেরও দাবি করেছিলেন। এর ঠিক একদিন পরেই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হল।
