আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত বৃহস্পতিবার ইন্ডিগো বিমানে সহযাত্রীর কাছে চড় খেয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন আক্রান্ত ব্যক্তি। চিন্তায় পড়েছিল হোসেন আহমেদ মজুমদারের পরিবার। শেষমেষ খোঁজ মিলল ওই যাত্রীর। কলকাতা থেকে ট্রেনে করে শনিবারই অসমের বরপেটা স্টেশনে পৌঁছান তিনি। কিন্তু ছিলেন কোথায়? সিএনএন-নিউজ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হোসেন আহমেদ মজুমদার জানিয়েছেন যে, সহযাত্রীর চড় খেয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তারপর কলকাতাতেই ছিলেন। 

সেই ভয়াবহ ঘটনার মর্মান্তিক বিবরণ দিতে গিয়ে ৩২ বছরের হোসেন বলেন, "কলকাতায় অবতরণের পরে অভিযুক্ত হাফিজুল রহমান এবং আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় থানায়। যার জেরে শিলচরের ফ্লাইট মিস করি। থাপ্পড় মারার কারণে আমার মাথায় ব্যথা হয়েছে। অসুবিধা হচ্ছিল। তাই আমাকে চেকআপের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।"

হোসেনের কথায়, "মুম্বই থেকে রাত দু'টোয় ফ্লাইটে উঠেছিলাম। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভয়ে আমার শরীর কাঁপছিল। আমি একজন যাত্রীর পাশে বসেছিলাম। তাঁর নাম হাফিজুল রহমান। আমি বুঝতে পারলাম, তিনি মুসলিম এবং আমাকে সালাম করেছিলেন তিনি। তিনিই আমায় চড় মারেন। তাতে আমি আরও ঘাবড়ে যাই।"

তাঁর দাবি, "অভিযুক্তের সঙ্গে আমি কোনও খারাপ ব্যবহার করিনি। তার পরেও কেনও আমাকে চড় মারলেন, আমি জানি না। কেবিন ক্রু-রা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন তিনি আমাকে চড় মারলেন। কিন্তু কোনও উত্তর দেননি তিনি। কেবিন ক্রুরা অনেক সাহায্য করেছেন। আমাকে জল খাইয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন তাঁরা।"

মাঝ আকাশে হামলার পর দুই দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ইন্ডিগোর যাত্রী হুসেন আহমেদ মজুমদার, সিএনএন-নিউজ১৮-এর সাথে একান্তে কথা বলেছেন, তার অবস্থান এবং ঘটে যাওয়া ঘটনার মর্মান্তিক ধারাবাহিকতার বিবরণ দিয়েছেন।

হোসেনের দাবি, ঘটনার পর কলকাতায় বিমান থেকে নামানোর পর, তিনি একাই শহরে ঘুরে বেড়ান, প্রার্থনার জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। তিনি সিএনএন-নিউজ১৮-কে বলেন, "আমি মুম্বই থেকে শিলচরের সরাসরি ফ্লাইট বুক করেছিলাম, কিন্তু ফ্লাইটে যা ঘটেছিল তার পর, তারা আমাকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামিয়ে দেয়। পরের দিন শুক্রবার ছিল, তাই আমি শহরে একটি মসজিদ খুঁজছিলাম, কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করেনি। অবশেষে আমি অন্য একজনের সাথে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ি। তারপর, আমি আসামের উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠি।" 

এই সময়কালে হোসেন আহমেদ মজুমদারের ফোন দুই দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ফলে তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ন ছিল, তাঁর অবস্থান সম্পর্কে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।