আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরিসংখ্যান, দেশ জুড়ে কয়েকদিনে বাতিল হয়েছে অন্তত হাজার বিমান। বিমানবন্দরগুলিতে ব্যাপক ক্ষোভ যাত্রীদের। দিল্লি বিমান বন্দরের অবস্থা শোচনীয়। গত কয়েকদিনে কেবল বিমান বাতিল নয়, যে পরিমাণ বিমানে বিলম্ব, তাতে কার্যত ধস বিমান ব্যবস্থায়।
ইন্ডিগো, দেশের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থায় ধস। আর এই পরিস্থিতিতে নিয়মে বদল আনল কেন্দ্র। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর তেমনটাই। জানা গিয়েছে, যে নিয়মকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বেনিয়ম, তা আংশিক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
কী ছিল নিয়মে?
আগে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, বিমানচালকরা ছুটি নিতে চাইলে, সেটিকে তাঁদের সাপ্তাহিক বিশ্রামের সময়সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ তাঁদের যে সপ্তাহে ৪৮ঘণ্টা বিশ্রামের জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে, তার মধ্যেই ছুটিকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। নয়া নির্দেশিকার পর থেকেই কার্যত অচল হয়ে পড়ে ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা। পরপর বিমান বাতিল, যাত্রীদের চরম ভোগান্তি, দেশজুড়ে ক্ষোভ, বিশৃঙ্খলা।
টানা চতুর্থ দিন অপারেশনাল সমস্যায় জর্জরিত ভারতের অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থা ইন্ডিগো। পাঁচ ডিসেম্বর পর্যন্ত, অন্তত ৬০০টি বিমান বাতিল হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, গোয়া, কলকাতা সহ দেশের প্রায় সব বড় বিমানবন্দরে। শুক্রবার দিল্লি বিমানবন্দর জানিয়েছে, মাঝরাত পর্যন্ত, সমস্ত বিমানের উড়ান বাতিল। জাতীয় বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক, সিভিল এভিয়েশন ডিরেক্টরেট-জেনারেলের সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে যে, বিকেল তিনটা পর্যন্ত বিমান বাতিল করা হয়েছে।
বিমান বাতিলের আবহে, দিল্লি বিমানবন্দরের চিত্র আরও ভয়াবহ। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানবন্দরের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে হাজার হাজার স্যুটকেস। বহু যাত্রী মেঝেতে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন।
কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন, কেউ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক যাত্রীর কথায়, ‘১২ ঘণ্টা হয়ে গেল। প্রতি ঘণ্টায় বলা হচ্ছে এক ঘণ্টা দেরি, দু’ঘণ্টা দেরি। বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম, কিন্তু লাগেজটাই পাইনি। কোনও পরিষ্কার তথ্য দিচ্ছে না। এখনকার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ এয়ারলাইন। বুঝতে পারছি না নতুন যাত্রী নিলেও লাগেজ কোথায় জমা করছে!’
আরেক যাত্রীর কথায়, বারবার ফ্লাইট পিছোচ্ছে। কোনও পরিষ্কার বক্তব্য নেই।’ অন্য এক যাত্রী বলেন, ‘১৪ ঘণ্টা ধরে বসে আছি। কোনও খাবারের কুপন নেই, কোনও সহায়তা নেই। কানেক্টিং ফ্লাইটও বাতিল হয়ে গেছে। মানুষ চেঁচাচ্ছে, কিন্তু কর্মীরা কোনও নির্দেশ দিতে পারছে না। জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর প্রশিক্ষণ নেই তাদের।’
