আজকাল ওয়েবডেস্ক: সারা বিশ্ব জুড়ে ঘুমের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, একটি আন্তর্জাতিক ঘুম সমীক্ষা প্রকাশ করেছে যে ভারতের দম্পতিরা ঘুমের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য ক্রমশই আলাদা আলাদা ঘুমানোর দিকে ঝুঁকছে। ResMed-এর ২০২৫ সালের গ্লোবাল স্লিপ সার্ভে অনুযায়ী, ভারতীয় দম্পতিদের ৭৮% 'স্লিপ ডিভোর্স' বা আলাদা ঘুমানোর পদ্ধতি গ্রহণ করেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এর পরেই রয়েছে চীন (৬৭%) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (৬৫%)।

এই সমীক্ষায় ১৩টি বাজারের ৩০,০০০ এর বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাপী একটি ঘুম সংকট দেখা যাচ্ছে, যেখানে যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দম্পতিদের মধ্যে ৫০% সবসময় একসঙ্গে ঘুমান এবং বাকি ৫০% মাঝেমধ্যে আলাদা ঘুমান। অনেক দম্পতির জন্য আলাদা ঘুমানো মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। এর মূল কারণগুলির মধ্যে রয়েছে সঙ্গীর নাক ডাকা, জোরে শ্বাস নেওয়া বা বায়ু নিঃসরণ (৩২%), অস্থিরতা (১২%), ভিন্ন ঘুমের সময়সূচি (১০%) এবং বিছানায় স্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস (৮%)। বয়স্ক প্রজন্মের মানুষদের মধ্যে এই ধরণের সমস্যা বেশি দেখা গেছে।

আলাদা ঘুমানোর পরও অনেক দম্পতি তাঁদের ঘুমের মান উন্নত হয়েছে এবং সম্পর্কের স্থায়িত্বও বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছেন। এমনকি তাঁদের যৌন জীবনও উন্নত হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে একসঙ্গে ঘুমানোরও কিছু সুবিধা রয়েছে। একসঙ্গে ঘুমানোর ফলে শরীরে অক্সিটোসিন নামে একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা কমাতে সহায়তা করে। একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে যে একসঙ্গে ঘুমানো দম্পতিদের মধ্যে সম্পর্কের সন্তুষ্টি এবং জীবনের সুখানুভূতি বৃদ্ধি পায়।

যখন অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সঙ্গীর পাশে ঘুমানোর সময় তাঁরা কী অনুভব করেন, তখন তাঁরা ভালবাসা (৫৩%), আরাম (৪৭%), শিথিলতা (৪১%), সুখ (২৭%), এবং শান্তি (২১%) উল্লেখ করেছেন। আজকের দ্রুতগামী বিশ্বে, কাজ, পরিবার, এবং সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেকে সময় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে, যার ফলে ঘুমের মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অর্থনৈতিক চাপ, এবং সম্পর্কের সমস্যা ঘুমের মানকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। বিশেষ করে ভারতের ৬৯% মানুষ মানসিক চাপকে তাঁদের ঘুমের প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।