আজকাল ওয়েবডেস্ক: তদন্তের মুখে বিস্ফোরক স্বাকারোক্তি করলেন ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী তাহাউর রানা। তিনি দাবি করেছেন যে, ২০০৮ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন বিশ্বস্ত এজেন্ট হয়ে ওই হামলার সময় তিনি শহরেই ছিলেন।
দিল্লির তিহার জেলে এনআইএ হেফাজতে থাকা রানা জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চকে জানিয়েছেন যে, তিনি এবং তাঁর বন্ধু এবং সহযোগী ডেভিড কোলম্যান হেডলি পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। রানা-র দাবি, লস্কর-ই-তৈয়বা মূলত একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে।
সূত্র মোতাবেক, রানা বলেছেন যে- মুম্বইতে একটি ইমিগ্রেশন সেন্টার খোলার ধারণাটি তাঁর ছিল এবং এর আর্থিক লেনদেনও ব্যবসায়িক খরচ হিসেবে করা হয়েছিল। তিনি স্বীকার করেছেন যে, ২৬/১১ হামলার সময় তিনি মুম্বইতে ছিলেন। পুরোটাই ছিল জঙ্গিদের পরিকল্পনার অংশ।
হামলার আগে তাহাউর রানা ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসের মতো স্থান পরিদর্শন করেছিলেন। তাঁর স্বীরারোক্তি যে, ২৬/১১ হামলা পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সহযোগিতায় পরিচালিত হয়েছিল।
৬৪ বছর বয়সী রানা আরও জানিয়েছেন যে, খালিজ যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাঁকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল।
জিজ্ঞাসাবাদের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তির পর মুম্বই পুলিশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাহাউর রানাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান রানাকে এই বছরের শুরুতে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়েছিল। ৪ এপ্রিল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তাঁর পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করার পর তাঁকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছিল। মে মাসে ভারতে আনার পর এনআইএ রানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেয়। ষড়যন্ত্র, হত্যা, জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং জালিয়াতি-সহ একাধিক অভিযোগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গত মাসে দিল্লির একটি আদালত রানার বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ৯ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
১০ জন পাকিস্তানি জঙ্গি পরিচালিত ২৬/১১ মুম্বাই হামলার ফলে তাজ ও ওবেরয় হোটেল, ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস এবং ইহুদি সেন্টার নরিমান হাউস-সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে প্রায় ৬০ ঘন্টা ধরে চলা হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন।
